রাত গভীর পর্ব ৪ (শেষ) সাহিত্য ডাইরি

রাত গভীর 

পর্ব ৪ (শেষ)

সাহিত্য ডাইরি 



ঠিক তখনই আমি দেখলাম একটা পিচ্চি মেয়ে গান গাইছে। পরনে ছিল সবুজ রঙের শাড়ি আর চুল গুলো খোলা ছিল। কোমর ছাড়িয়ে হাঁটু অবধি চুল। অসাধারণ এক মায়াবী কণ্যা।

চোখ জোড়া কাজলের খালি দিয়ে আকাঁ।আর ঠুটেঁ ছিলো লাল লিপস্টিক। বেশ মানিয়ে ছিল সাজটা।

মূলত তাকে ভালো লেগে যাই, তার ঘনকালো চুলের গোছার জন্য ।আর ভুবন ভোলানো হাসির জন্য। তার হাসি টা বেশ সুন্দর। আমি তাকে গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।কিন্তু সে তো সে কথা জানে না।

সে তার আপন মনে গান গেয়ে চলেছে । আর ওকে ঘিরে বসে থাকা ছেলে মেয়েরা মুগ্ধ হয়ে গান শুনছে। 

হঠাৎ সে গাইতে শুরু করে, 

"দেখা হাজারো দাফা আপকু

পির বেকারারি কেচি হে,

তখন,

আমি বলে উঠিঃ বাহ।আমার অনুভূতির সাথে খাপেখাপ খেয়ে গেছে।

তবে আমি খেয়াল করিনি আমি ওর খুব কাছে চলে আসি।

আর একটা কথা আমাদের জীনেদের মেয়েদের সুন্দর চুলের প্রতি দূর্বলতা থাকে। 

তাই রাতে কোথাও গেলে মেয়েদের চুল সামলে রাখা উচিত। 

কিন্তু তখন প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেছে।তার চুল আর তার সাজ।সন্ধ্যার হলকা আলো আর আধারের সময়ে তাকে আরো সুন্দর করে তুলেছে। 

বলতে পারেন, সেই মুহুর্তে তার সৌন্দর্য কয়েক শ গুণ বেড়ে গিয়েছিল।

তার খুব কাছে চলে গেছিলাম। যার ফলে তার চুলের অপরুপ ঘ্রাণ আমার নাকে পাচ্ছিলাম।অনুভব করতে পারছিলাম সেই মন মাতানো সৌরভ।

আমি উপলব্ধি করলাম আমি ওর থেকে ২ ইঞ্চি দূরত্বে আছি। 

কবিরা ঠিকই বলেছেনঃ মেয়ে দের চুলে এক অপরুপ ঘ্রাণ থাকে। যা মন উতালপাতাল করে দেয়। 

সেদিন গান শেষ হতেই সবাই চলে যেতে লাগলো। আমি সেই মেয়েটির পিছু নিলাম। 

ওর বাড়ি টা চিনে নিলাম। 

সেই মায়াবিনীর নাম ছিল রিনি।

প্রশ্ন আসতে পারে, নাম কেমনে জানলাম? 

যখন সে বাসায় ফিরে যাই।তখন তার মা রাবেয়া বলেছিলঃরিনি ফিরে আসচস।এত

দেরি হলো কেন? 

আমি সেই ভাবে সেদিন তার নাম জানতে পারলাম। 

এরপর আমি রাজ্যে ফিরে আসি।কারণ শাম্মি চিন্তা করবে দেরি হলে।

কিন্তু সেদিন রাতে আমার অবাধ্য মন আবার পাগলামি শুরু করে বসে। 

তখন ইচ্ছে হচ্ছিল, মায়াবতীর চুলের ঘ্রাণ নিতে,তার কালো আকর্ষনীয় চুলগুলো দেখতে। 

আমি আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারিনি। অবশেষে সেদিন রাতে রিনির বাসায় প্রবেশ করি।রিনির রুম খুঁজে পেতে কষ্ট হলো।কিন্তু শেষে ঠিকই খুঁজে পেলাম। 

আমি যখন রুমে গেলাম। দেখি সে বাচ্চা মেয়ের মত ঘুমাচ্ছে। তার ঘুমন্ত মুখ দেখে আমি আরও ঘায়েল হয়ে গেলাম। 

আসলে কিছু কিছু মেয়েদের ঘুমন্ত মুখ দেখতে অসাধারণ লাগে।

আমি তাকে ছুয়ে দিতে চাইলাম। কিন্তু পারলাম না। 

আমি চিন্তায় পড়ে যায়। কেন এমন হলো? 

আমি আমার শক্তি ব্যবহার করে দেখি যে ঠিক কি কারণে এমন হচ্ছে? 

অবশেষে বুঝতে পারছি, সে রাতে ঘুমানোর আগে আয়াতুর কুরছি পড়ে ঘুমিয়ে ছিল। তাই তাকে পাশে যাওয়া বা স্পর্শ করা আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছিল না।

রাতে ঘুমানোর সময় আয়াতের কুরছি পড়লে জীনরা ধারে কাছে আসতেই পারে না।

আমার ক্ষেত্রে ও তাই হলো।

আমি তাই সামনে থাকা চেয়ারে বসে রিনি কে দেখছিলাম। রাত যখন গভীর হতে থাকে রিনি নাড়া ছাড়া শুরু করে দেয়। 

সে ঘুমানোর সময় প্লাজু আর ফতুয়া পড়ে ছিল। 

নাড়াচাড়া করার ফলে ফতুয়া কিছুটা উঠে গেছে। যার ফলে কোমরের খানিকটা দেখা যাচ্ছে। 

তার কোমরে একটা কুচকুচে কালো তিল ছিলো। বেশ আকর্ষনীয় লাগছিল। 

বেশ কিছুক্ষণ ছিলাম রিনির রুমে। 

কিন্তু ফজরের আযান দিতেই আমি রাজ্যে ফিরে আসি। এইটুক বলে,প্রিন্স চুপ হয়ে যায়।

লাবু বলেঃ তারপর কি হলো?? 

প্রিন্স আবার বলতে শুরু করে,

আমি আবার সকালে রিনি কে দেখতে গেলাম। 

সে স্কুলে যাচ্ছিলো।

আর আমি আমার রুপ কিছুটা কালচে ভাব এনে ওর সামনে স্কুলের পথে ইচ্ছে করে ধাক্কা খেলাম।

রিনি বলেঃ ওই মিয়া, চোখ জোড়া কি বাসায় রেখে আসছেন নাকি চোখ জোড়া বন্ধ করে চলেন???

আমি বলিঃ উমমম।২ টাই সঠিক। 

রিনি আর এক মুহূর্ত না দাঁড়িয়ে স্কুলে চলে গেল। 

আমি দাড়িয়ে থেকে তার চলে যাওয়া দেখছিলাম। 

এই ভাবে রোজ দেখা হতো।

তবে রিনি কখনো আমার সাথে ভালো ভাবে কথাই বলতো না।

আর আমি যখন প্রতিদিন স্কুলের পথে দাড়িয়ে থাকতাম। আমার এক বন্ধু আমাকে সঙ্গী দিতো।জীন বন্ধু আরকি।।

সে বন্ধু হলো,রহমান জীন।

রহমান বলেঃ আরে জীন রাজ্যে কত অপ্সরা তোর উপর মরে।আর তুই কিনা এই মেয়ের জন্য ফিদা হয়ে গেলি???

প্রিন্স বলেঃ ও হাজারের মধ্যে একজন। পৃথিবীতে আমার চোখ ও সেরা রূপবতী। 

এইভাবে চলতে থাকে।

প্রিন্সকে দেখলেই রিনি রাগী একটা মুখ বানিয়ে চলে যেতো। 

তবে প্রতিদিন রিনির রুমে প্রিন্স যেতো। ধরা,ছোঁয়া যেতো না।শুধু দূর থেকে দেখা যেতো। সে প্রতিদিন আয়াতুল কুরছি পরতো। তাই এমনটা হতো।

তবে বেশ লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতাম রিনি কে।যত দেখতাম ততবেশি ভালো লেগে যেতো। 

একদিন স্কুলের রাস্তায় ওর জন্য অপেক্ষা করছিলাম। 

একটা ছেলে খুব handsome করে।স্কুলের অপজিটের দোকানে দাঁড়িয়ে আছে। 

রিনি প্রতিদিন এই দোকান থেকে "পানি পুরি"/ পুস্কা খেতো। 

তাই আমার নজর সে দোকানের দিকে ছিল।

রিনি আজ ও গেলো সে দোকানে।কিন্তু সেই ছেলেটা রিনি দোকানে প্রবেশ করতেই হাঁটু গেরে প্রপোজ করে বসে। 

রিনি কোন কিছু না বলে পাশ কাটিয়ে চলে গেল। 

আমার বন্ধু রহমান বললোঃ মামা, যা করার তাড়াতাড়ি করো না হলে,

"আম ও যাবে চালি ও পাবে না"

প্রিন্স বলেঃ আচ্ছা কাল কে কিছু করবো!

পরদিন সকালে প্রিন্স ১০০ টা গোলাপ আর বেশি করে চকলেট আর একটা পুস্কার দোকান সহ রিনির অপেক্ষাই আছে। 

রিনি আসতেই প্রিন্স হাঁটু বাজ করে ফুল দিলো।

কিন্তু ঠিক তখনই রিনি,

আমাকে অবাক করে বসে।

সে আমার হাতে রাখা ফুল গুলো নিয়ে নেই। আর ১ সেকেন্ড দেরি না করে সেগুলো মাটিতে ফেলে দেয়। আর ফুল গুলো পা দিয়ে নষ্ট করে পেলে।

আর চকলেট গুলো ডাস্টবিনে ফেলে দেয়।

এরপর আমি অবাক হয়ে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি।

ওর কান্ড দেখে আমি ভাবনায় পড়ে যায়।

আমার ভাবনায় ছেদ পড়ে যখন গালে একটা তিব্র যন্ত্রণা অনুভব করি।

একটু পর বুঝতে পারছি, আমার গালে রিনি থাপ্পর দিয়েছে।

আর রিনি বলেঃ তুর সাহস কেমনে হয় আমাকে প্রপোজ করার?

তুর মতো হাজার টা লাফাঙ্গা আমি জীবনে অনেক দেখছি। নিজের মুখ মনে হয় আয়নার মধ্যে দেখিস নাই?

এই মুখ নিয়ে আমাকে প্রপোজ করতে আসচস?

দেখস নাই ওইদিন সে ছেলে টা কে ও একসেপ্ট করিনি।

তুই যে আমাকে follow করস আমি জানতাম।

কিন্তু তো আজ লিমিট পার করে দিলি।

আসছে, বামন হয়ে চাঁদ এ হাত দিতে চাইছে।।

নিজেকে আমার উপযুক্ত কর তারপর ভেবে দেখবো।

প্রিন্স বলেঃ বাহ! এত তেজ?

কিসের এত অহংকার?

তোমার লাইফ যদি তচনচ না করি তাহলে আমি ইনতিয়াজ নই!!!

ওর সামনে প্রিন্স টা বলিনি, কারণ চাইনা ও জানুক আমি একটা প্রিন্স।

আমার কথা গুলো,

রিনি কোন পাত্তা না দিয়ে চলে গেল।

রহমান বলেঃ দুস্ত মাথা ঠান্ডা কর।ওরা মানুষ ওদের সাথে অদৃশ্য ভাবে অনেক কিছু চাইলে করা যায়।

কিন্তু আমরা অন্যের ক্ষতি না করাই ভালো। আর তুই তোর আসল রুপ নিয়ে প্রপোজ করলে কি হতো?

প্রিন্স বলেঃযে চিনবে সে কয়লার মধ্যে থেকে খাঁটি সোনা ও বের করতে পারবে।

সে খাঁটি জিনিস খুঁজে পাইনি।

কথায় আছে না, "Don't judge a book by it’s cover"

ও আমার cover দেখে আমাকে যাচাই করেছে।এটা তার ব্যর্থতা কিন্তু

আমাকে অপমান এর প্রতিশোধ আমি ওর থেকে নিয়ে ছাড়াবো।

কিন্তু সেদিন রাতে আবার তার রুমে প্রবেশ করি। তবে মনের টানে নই।প্রতিশোধের নেশায়।

সেদিন রাত গভীর হতেই আমি রিনির রুমে প্রবেশ করি। কিন্তু রিনি কই?

এই রুমে নেই।

এইভাবে ৭ দিন গেলাম কিন্তু পেলাম না।

৮ ম দিনের দিন দেখি আমি রিনির বাসায় প্রবেশ করতেই পারছিলাম না। যখনই প্রবেশ করতে যায় কি যেন অদৃশ্য শক্তি আমাকে বাঁধা দিচ্ছেলো।

এই ভাবে প্রতি দিন যেতাম কিন্তু ওর দেখা পেতাম না।

এই ভাবে ২ বছর কেটে গেছে। অবশ্য রিনির কিছু মনে থাকার কথা না। কিন্তু আমার মনে ওর বলা প্রতিটি কথা মনে আছে।

এক প্রকার কথা গুলো মনে দাগ কেটে দেয়।

কিন্তু হঠাৎ একদিন আমি ওদের বাসায় প্রবেশ করতে পারলাম।২ বছর পরে সেদিন রাতে সফল হয়ে ছিলাম।

আর এক মুহূর্ত দেরি না করে রিনির রুমে প্রবেশ করি।দেখি রিনি ঘুমাচ্ছে।

মেয়ে টা আরো সুন্দর রমনী হয়ে গেছে।তবে বাচ্চা বাচ্চা ভাবটা এখনো রয়ে গেছে।

আর সেদিন লাল রঙের ফতুয়া পড়া ছিলো।

খুব attractive লাগছিলো। কিন্তু

মনের তিব্র রাগ আর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য মন অস্থির হয়ে গেছে।

ফলে ঝাপিয়ে পড়লাম তার শরীরে।খুব তেজ খুব অহংকার এই দেহ?

এই রুপ নিয়ে?

সেদিন তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ জিনিস, তার সম্ভ্রম আমি নষ্ট করে পেলি।

আর সেদিন রাগে আমি খেয়াল করিনি তার কষ্ট হচ্ছে।

আর সেদিন সে আয়াতুল কুরছি পড়েনি হয়তো। তাই অতি সহজে আমি আমার উদ্দেশ্যে সফল হয়।

সেদিন খুব ভালো লেগে ছিলো। আমার প্রতিশোধ নিতে পেরে।কিন্তু সেদিন আমার অন্য কোন দিকে মন ছিল না। হঠাৎ

রিনি বলেঃঘুমের মধ্যে। ছেড়ে দাও প্লিজ। আমার কষ্ট হচ্ছে অনেক।

দেখলাম সে জেগে উঠছে আস্তে আস্তে।

কিন্তু আমি জাদু দিয়ে ওর কাছে বাস্তবটাকে স্বপ্নে পরিনত করে দি।আর আমার মুখ ভালো ভাবে চিন্তো না।কারণ আমি আমার বাস্তব রূপে ছিলাম।সেই কালো অবস্থায় থাকলে হয়তো কিছু টা চিনতে পারতো।

আমার জাদুর ফলে ওর কাছে সব স্বপ্ন মনে হতো।

আমি সেদিন রাত যখন গভীর ছিলো তখন তার সাথে শুভ মুহূর্তে মিলনের ফলে সে আমার কন্ট্রোলে চলে আসে। আর আমার জাদু শক্তি তো ছিলোই। মিলনের ফলে সে আর আমি এক হয়ে যাই। যার ফলে,

আমি রিনি কে কন্ট্রোল করতে পারতাম সহজেই।

আর ওকে ঘুমানোর আগে দোয়া পড়তে দিতাম না।করণ আয়াতুল কুরছি পড়লে আমি তার আশে পাশে ও যেতে পারবোনা।

এইভাবে চলছিল সময় ।রাত যখন গভীর হতো আমি রিনির কাছে যেতাম। আর ফজরের ওয়াক্তের একটু আগে রাজ্যে ফিরে যেতাম।

এরপর আবার চুপ হয়ে গেছে প্রিন্স।

রাবেয়া বলেঃ বাহ! এখন তো শান্তি পাইচো?আমার

মেয়ের জীবন নষ্ট করে।

আর আমার মনে যে প্রশ্নের উদয় হচ্ছে সেগুলোর উত্তর দাও।ওর কাছে একই কাপড় কেন হতো?

আর গোসল করলে চুল শুকনো কেন থাকতো?

আর পানি বালতিতে পরার শব্দ পেতামনা কেন?

প্রিন্স বলেঃ আমি রাতে আমাদের শারীরিক সম্পর্ক শেষ হতেই। জাদু দিয়ে তার জন্য পানি রেখে দিতাম। আর একই রকম কাপড় এনে রাখতাম। যে কাপড় ঘুমানোর আগে পরতো সেরকম কাপড় আমি এনে রাখতাম। আর ভেজা কাপড় রাজ্যে ফিরে যেতে নদীতে ফেলে দিতাম।

রিনি সম্পূর্ণ আমার আয়ত্তে ছিল, তাই তাকে গোসল করাতে শুধু ইশারা করলে হতো।তার শরীর আপনা আপনি গোসল করে ফেলে।

সে ঘুমন্ত অবস্থায় গোসল শেষ করে ।আর গোসল শেষে চুল শুকনো করে দিতাম আমি।

তারপর সে বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসতো।

যেদিন আমাদের প্রথম মিলন ঘটে। সেদিন রিনি ব্যথায় চিৎকার করে বসে। যার কারণে শব্দ আপনাদের রুম অবধি গেছিলো। এরপরে তেমন শব্দ হতো না।হালকা শব্দ হতো।

আর আমরা জিনে রা আগুনের তৈরি। তাই আমাদের উজ্জ্বলতা সহ্য করতে পারেনা মানুষ। দেখে থাকলে চোখ জোড়া জ্বলতে থাকবে ।তবে আমাদের যাকে ইচ্ছে দেখা দিই।

সে সেই উজ্জ্বলতা সহ্য করতে পারে।

আর আমি জানালা দিয়ে প্রবেশ করতাম।তাছাড়া আমি অদৃশ্য তাই বাসায় প্রবেশ করতে সমস্যা হতো না।

প্রিন্স তার কথা শেষ করতেই।

রাজা(রশিদ) বলেঃঅর্ক,রাহাত হুজুর আপনারা প্রিন্সকে যে শাস্তি দিবেন। আমি মেনে নিবো।

অন্য দিকে রিনি সব শুনে অবাক হয়ে যাই।

রিনি বলেঃ আপনি আমার জীবন নষ্ট করে দিলেন।আমি কখনো আপনাকে ক্ষমা করবো না।

সেদিন মায়ের সাথে ঝামেলা করে স্কুলে গেছিলাম। মন,মেজাজ কিছু টিক ছিলো না।

রাগের মাথায় ও এসব কথা বলে পেলি।সব রাগ আপনার উপর উঠে গেলো।প্রপোজ করছেন যে তা দেখে।

আর এসব কথার জন্য আপনি এই ঘৃণার কাজ করলেন। ছি!!!

রুমে অবস্থান রত সবাই নিরবে আছে।

তখন নীরবতা ভেঙ্গে,

কামাল বলেঃরাবেয়া রিনি কখন এইভাবে চুল ছেড়ে বাহিরে গেছিলো? আমার আদেশ কি ছিলো বোরকা ছাড়া যেন বের না হয় রিনি।আর তা না হলে ভালো করে হিজাব পড়ে যাতে বের হয়।!তোমরা মা মেয়ে আমার আদেশ অমান্য করেছো.যার ফলে দেখো এই পরিণতি।

রাবেয়া জবাব দাও???

রাবেয়া বলেঃরিনি তখন ক্লাস ৮ এ ছিলো। তার জন্মদিন ছিলো সেদিন । আর তুমি অফিসের কাজে মালেশিয়া গেছিলে।

রিনির বান্ধবীরা সবাই অনুরোধ করে।

তা ছাড়া তখন রিনি বোরকা পরতো না।

সেদিন রিনি বলেঃ মা,তোমার সবুজ রঙের শাড়িটা দিবে? আজ একটু চুল খুলে দি?

বাবা তো দেশে নেই।

আমি শাড়ি পড়িয়ে দেই। আর সাজিয়ে দি।চুল খুলে দি রিনির।কারণ মেয়ের আবদারের কাছে হেরে গেছিলাম সেদিন।

অবশ্য,

এই কথা টা তোমার কাছে লুকিয়ে ছিলাম।

রিনি আমাকে সব কিছু শেয়ার করে।সেদিন প্রিন্সের প্রপোজালের কথা ও বলে।

কিন্তু সেদিন সকালে আমার একটা চেইন খুঁজে পাচ্ছিলাম না।যার ফলে অনেক রাগ হচ্ছিলো আর আমি রিনিকে বকা দিয়ে পেলি।

আর রিনি প্রিন্স কে অসম্মান করে বসে।

কিন্তু সেদিন প্রিন্স বাসায় প্রবেশ করতে ব্যর্থ হয়েছিল।কারণ........


কিন্তু সেদিন প্রিন্স বাসায় প্রবেশ করতে ব্যর্থ হয়েছে কারণ, রিনি সেদিন নারী হিসেবে পূর্ণতা পাই।আর তাই আমি হুজুরের সাথে কথা বলে রিনিকে আলাদা ঘরে রাখি।আর ৭ দিন পর রিনি যখন সুস্থ হয়ে গেছে। তখন পুরো ঘর বাঁধাই করা হয়।যার ফলে জীন,খারাপ জীন কেউ আমার বাড়ি তে প্রবেশ করতে পারতো না।

তবে ২ বছর পর প্রিন্স বাসায় প্রবেশ করতে সফল হওয়ার একটা কারণ আছে। তা আমি এখন বুঝতে পারছি।

কামাল তোমার মনে আছে, তোমার বোন শারমিন আমাদের বাসায় আসছিল।বাচ্চা প্রসবের জন্য?

কামাল বলেঃ হা মনে থাকবেনা। আমি একটা পরীর মত ভাগিনী পাই ছিলাম।

রাবেয়া বলেঃ হম।শারমিন এর বাচ্চা আমাদের বাসায় প্রসব করার কারণে আমি যে হুজুর দিয়ে ঘর বাঁধাই করে ছিলাম তার গুণাগুণ নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে,প্রিন্স কোন বাঁধা ছাড়াই আমার বাসায় প্রবেশ করতে পারে।

এসব বলে রাবেয়া চুপ হয়ে গেছে।

কামাল অবশ্য রাগে ঘচঘচ করছিলো।

ঠিক তখনই,

রাহাত হুজুর বলেঃ রাজা মশাই, আপনার ছেলে কে আমি বোতল বন্দী করতে চাচ্ছি। আর বন্দী করে সাগরে ফেলে দিতে চাইছি?

রাজা মশাই বলেঃ বেশ,তবে তাই করেন! আমার কিছু বলার নেই।

শাম্মি বলেঃ ভাই, তুই যা করছস তা অন্যায়।

যারা অন্যায় করে তাদের শাস্তি দিতে হয়।তুই যদি এখন শাস্তি না পাইতি তবুও জীবন এর এক পযার্য়ে গিয়ে ঠিকই শাস্তি পাইতিস।আর,

সত্যি কখনো লুকিয়ে রাখা যায় না।যতই মিথ্যার আশ্রয় নিক না কেন সত্যি একদিন না হয় একদিন প্রকাশ হয়ে যেতো। আর আমাকে আগে সব কিছু বললে হয়তো আমি তোকে এত বড় ভুল করতে দিতাম না।

তবে আশা করছি, কোন এক সময় তুর সাথে আবার দেখা পাবো!!!

অন্য দিকে,

রিনি যেন প্রাণ হীন হয়ে গেছে। একদম চুপচাপ হয়ে বসে আছে সেই নামাজ ঘরে।

রাহাত হুজুর বলেঃ রিনি,মা আমারা যে শাস্তি দিচ্ছি তুই কি সহমত?

অনেক জিজ্ঞেস করার পর ও কোন লাভ হয়নি।

চুপচাপ বসেই আছে তখনও।

তখন অর্ক আর রাহাত হুজুর ফুঁ দিয়ে দিলেন প্রিন্সের শরীরে। আর প্রিন্সকে বিভিন্ন ধরনের দোয়া পড়ে বোতল বন্দি করে। এরপর,

রাহাত হুজুর বললোঃ আমি যাচ্ছি,সাগরে ফেলে দিতে এই বোতল টা!

এরপর জীন রাজা রাজা তার মেয়ে শাম্মি তাদের রাজ্যে ফিরে গেল।

জান্নত বলেঃ উচিত শাস্তি হয়েছে।

সুমি অবশ্য কিছু বলেনি।

হাবিব বলেঃAll is well, the end is well.

লাবু বলেঃ সত্যি, অদ্ভুত অবিজ্ঞতা ছিল।

রাহাত হুজুর প্রিন্স কে সাগরে ফেলে দেয় আর রাতে ফিরে আসে। সবাই বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসে।

অতপর,সব কাজ শেষ হয়ে যাই রাত ১১ টার দিকে।

রিনিকে নামাজ ঘরের থেকে বের করে চেয়ারে বসালো। সবাই রাতের খাবার শেষ করে নেই।

আজ সবাই চিন্তা মুক্ত।কারণ তাদের মেয়ে রিনি আর রাত যখন গভীর হতো যে অঘটন এর স্বীকার হতো, আজ থেকে এমন কিছু হবে না।

অবশেষে প্রিন্সের কাছ থেকে মুক্তি পেল তাদের মেয়ে রিনি।

সবাই বসে আড্ডা দিচ্ছে।

রিনি ও তাদের থেকে একটু দূরত্ব রেখে বসে আছে। চুপচাপ হয়ে।

লাবু কফি বানিয়ে আনে।সবাই কফি খাচ্ছে।

রাত যখন গভীর হচ্ছে, সবার ঘুম পেতে লাগলো।রিনি তখন ও চুল গুলো এলোমেলো রেখে বসে আছে। বেলকনির পাশে। কিন্তু, যখন সবাই ঘুমাতে যাবে, ভাবছিল ঠিক তখনই,

ঘরের সব লাইটগুলো মুহূর্তের মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। সবাই আর কিছু দেখতে পাচ্ছে না। মোবাইল গুলো তাদের পাশে ছিল না।

তখনই,

রাবেয়া বলেঃ সবার আওয়াজ শুনতে পারছি। কিন্তু রিনির আওয়াজ শুনতে পারছি না কেন?রিনি তো অন্ধকারে ভয় পাই। অন্য দিন হলে চিৎকার দিয়ে বাসা পুরো মাথায় তুলে ফেলতো?

কিন্তু আজকে অন্ধকারে কেন ওর সাড়া পাচ্ছি না!!!!

একটু পর, লাইটগুলো মুহূর্তের মধ্যে জ্বলে উঠে। আর সবাই দেখে আসে পাশে কোথাও রিনি নেই।

বেলকনিতে ও ভালো ভাবে দেখে।কিন্তু সেখানে ও নেই। অর্ক আর রাহাত হুজুর তাদের শক্তি দিয়ে খুঁজে দেখে।তার ফলাফল ও ছিল শূন্য। সুমি,জান্নাত, হাবিব ও কিছু করতে পারেনি।অনেক চেষ্টা করছে। কিন্তু

কোন খুঁজ মিলেনি।।।

সব জায়গায় খুঁজে ও রিনি কে পাওয়া যায় নি।ফলাফল শূন্য।

একদিকে প্রিন্স গভীর সমুদ্রের জলে ভেসে বেড়াচ্ছে বোতল বন্দী হয়ে। আর অন্য দিকে রিনি নিখোঁজ।

আসলে,

কিছু গল্পের পরিনতি সুখের হয়না।পূর্ণতা মিলে না সব গল্পের। এই গল্প টা ও ঠিক তেমনই একটা গল্প। গল্প টা ঠিক অসম্পূর্ণ রেখে শেষ করলাম । *****


%%%আপনারাই বলেন ঃ আসলে রিনি কোথায়?? %%%সবার মন্তব্য আশা করছি ****

[ আমার লিখা গল্প " রাত গভীর " আপনাদের কাছে কেমন লাগলো?

অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন কিন্তু!

আমি আশা করছি সবার মতামত কমেন্ট করে জানাবেন।


আর সবাই কে ধন্যবাদ সম্পূর্ণ গল্প পড়ার জন্য।

আশা করছি পরবর্তী গল্পে ও একই ভাবে পাশে থাকবেন।।।

0 Post a Comment:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন