সোমবার, ২৬ মে, ২০২৫

রম্য কাহিনি

 



ধর্ষক রা সাতজন ছিলো বাবা....। আর ওদের মধ্যে একজন কে আমি বিয়ে করতে চাই।।।


ওয়াট....??


হ্যা বাবা ঠিকই বলছি আমি।। ওই ছেলেকে বিয়ে আমার করতেই হবে।।।


পুরো পরিবারের লোকজন থ সেজে গেলো আমার কথায়।।। জানি অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে এখন আমায়।।। কিন্তু আজকে কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করবো না আমি।।। কাউকে এ বিষয়ে কোনো কইফিয়তও দিতে প্রস্তুত না আমি।।। আর এ কথাটি জোরেই বলে ফেললাম সবার সামনে। তারপর মজলিস থেকে ওঠে আমার ঘরে চলে গেলাম।।


আজকে নিজের মধ্যে একটা প্রশস্তি অনুভব করছি।। সবার সামনে এ রকমভাবে কথা বলতে পেরে খুব ভালো ফিল করছি আমি।। এই প্রথম আমার পরিবারের সামনে এমন উচু গলায় কথা বললাম।। আর এ নিয়ে আমার ভেতর কোনো অনুতপ্ততা কাজ করছে না।।। বরং মনে হচ্ছে আরো আঘাত দিয়ে কথাগুলো বলা উচিত ছিলো।।।


সম্ভ্রান্ত এক বড় পরিবারে জন্ম আমার।। বলতে গেলে সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মেছি আমি।। কখনও কোনো ব্যাপারে আমার চাওয়া, না পাওয়া ওয়ে ওঠেনি।। আর পরিবারের আদর সেতো আর বলে বোঝাবার মতো নয়।।


আমার সবচেয়ে প্রিয় ব্যক্তিত্ব আমার বাবা।। উনার রাজকীয় চলাফেরা, সবার সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া সবই তার রাজকীয় চলাফেরার প্রতীক বহন করে।। এতসবকিছুর মাঝেও তিনি তার মেয়েকে সময় দিতেও এতটুকু ভুল করে না। আর আমার চাওয়াকে তো নিমিষেই মিটিয়ে দিতো বাবা।। তাইতো আমার কাছে বাবার জনপ্রিয়তা সবার তুঙ্গে।।


কিন্তু এত প্রভাবশালীতার মাঝেও আমার সাথে এ রকম এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটবে, তা কেউ কখনও স্বপ্নেও ভাবেনি।। এমনকি কারো সাথে ব্যক্তি গত শত্রু তাও ছিলো না আমার বা আমার পরিবারের।


যদিও ব্যাপারটা আমার পরিবারের বাইরে কেউ জানে না।। কিন্তু জানতেই বা কতদিন??


আর এই চিন্তা নিয়েই আমার পরিবারের এত মাথাব্যথা।। তাইতো আমাকে ফিরে পেতেই সবার এমন ঘোট পাকিয়ে প্রশ্নউত্তর পর্ব চললো বেশ কিছুক্ষণ।


কিন্তু আমার কঠিন থেকে কঠিনতম কথার ব্যাড়াজালে সবাই যে হতবাক, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।।


এই তিনদিন আমার পরিবার আমাকে হন্নে হয়ে খুজেছে।। কিন্তু কোনো খোজ মিলাতে পারেনি।।


তাইতো আমার কাছ থেকে বারবার জানার চেষ্টা করছে আমি ওদের কাউকে চিনতে পেরেছি কিনা??


আমি জানি না ওদের পেলে কি করবে আমার


পরিবার?? তবে আমি নিশ্চিত এতবড় ঘটনা, এমনিতেই


আমার পরিবার ছেড়ে কথা বলবে না কাউকে খুজে পেলে।। এরমধ্যে আমার বলা কথাটা তাদেরকে আরো


পুড়িয়ে মারছে।। একে একে সবারই একটাই প্রশ্ন, আমি কেনো এরকম ঘটনার পর বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে


চাচ্ছি?? রংধনুর রং !


তখনো ঘরের দরজা বন্ধ করেই বসে আছি।


বারবার বাড়ির লোকের জ্বালাতন আর ভালো লাগছে না।।


তাই তো চিৎকার করে মাকে বললাম প্লিজ আমাকে একা থাকতে দাও মা।। তারপর অবশ্য আর কেউ আসে নি।। আমি জানালার পাশে বসে আছি।। সূর্যের প্রখর তাপ প্রায় নিঃশেষ হয়ে এসেছে।। আকাশে লাল নীলিমার রেখা ফুটে ওঠেছে।। জানালাটা আরেকটু খুলে দিলাম।। চোখের কোনে লেপ্টে থাকা জলবিন্দু ওরনা দিয়ে হালকা মুছে নিলাম।। উদাস মনে আকাশের পরিবর্তনের দৃশ্যটা উপভোগ করছিলাম ভাংগা হৃদয়ে এতটুকু আশা জাগানোর নেশায়।।ওরা সাতজন ছিলো।। ভার্সিটির ক্লাস শেষ করে নির্জনে বাড়ি ফিরছিলাম শহরের রাস্তা বেয়ে।


আমার পছন্দের ব্রীজের ওপর আসতেই একটা কার আমাকে নিস্তব্ধ ভাবে তুলে নিলো।। তারপর আমার স্মৃতির পাতা জ্ঞান শূন্য হয়ে আসছিলো।। যখন সজ্ঞানে ফিরে এলাম, তখন নিজেকে অচেনা রুমে আবিষ্কার করলাম।। খুব ভয় লাগছিলো আমার।। ভয়ে চিৎকার করে ওঠলাম, কিন্তু ফিরতি প্রতিধ্বনি আরো ভয়ানক ভাবে ধরা দিলো আমার কানে।। মনে হলো এ স্থান জনশূন্যতার আধারে ভরে আছে।।


আমি গুটিশুটি মেরে ঘরের এক কোনে নিজেকে লুকিয়ে রাখলাম।। কিছুক্ষন পর দরজা খোলার আওয়াজে আরো ভীত সন্তপ্ত হয়ে পড়লাম।।


কয়েকজন যুবক ব্যাপক আগ্রহ নিয়ে রুমে প্রবেশ করলো।।


আর অদ্ভুত চাহনি নিয়ে আমার দিকে

তাকিয়ে ছিলো। যেনো ক্ষুধার্ত হায়েনার সামনে একখন্ড মাংসপিণ্ড।।


আমি ভয়ে নিজেকে আরো জড়িয়ে নিলাম।। আর বললাম


কে আপনারা প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন।।। আমার কথায় তারা রাজ্য জয়ের হাসি দিয়ে লুটিয়ে


পড়তে লাগলো।।


হঠাৎ ই কারো পায়ের আওয়াজে থমকে দাড়ালো ওরা।। একদম নিশ্চুপ ভঙ্গিতে দাড়িয়ে গেলো।।। আমিও কিছুটা বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে থাকলাম।।।। !


বেশ সুদর্শন এক লম্বা পুরুষ, মাথার ঝাকরা চুলগুলো ঠিক করতে করতে রুমে প্রবেশ করলো।। ওকে দেখে সবাই সরে দাড়ালো এবং সালাম দিলো।। বুঝলাম ইনি এদের

পালের গোদা।। রুমে ঢুকে বেশ কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো।। তারপর উষ্ণ হাসি দিয়ে চুল ঠিক করতে করতে আমার সামনে এসে বসলো।। আমি চরম ভীত সন্তপ্ত হয়ে পড়লাম।। আমার থুথনিতে হাত দিয়ে চোখটা তুলে ধরে বললো


বাহ্ খুব সুন্দর হয়েছে তো তুমি ...!! ঘৃনা, রাগ, ভয় তিনটাই চরম আকার ধারন করলো আমার মনে।।। খুব শান্ত ভীত হয়ে


একবার শুধু বললাম কে আপনি?? আর আমাকে এভাবে ধরে এনেছেন কেনো?? প্লিজ ছেড়ে দিন।।


কিছু না বলে ছেলেটি উঠে দাড়ালো।। পেছন ফিরে ওদের জিজ্ঞেস করলো,, খেতে দিয়েছিস ওকে।।।


ওদের মধ্যে একজন বলে ওঠলো – দেমাগ দেখিয়ে খায়নি বড় ভাই।।।কথাটি শুনে হাসি দিয়ে আবার আমার কাছে এসে গালে আলতো করে ছুয়ে বললো


রাগ দেখাতে নেই।। খেয়ে নাও।। আমি তখন ক্রোধে আরেকবার বলে ওঠলাম


আমায় ছেড়ে দে বলছি, আমার বাবা জানতে পারলে তোদের একজনকেও বাচিয়ে রাখবে না।।।


ছেলেটি দাড়াতে যাচ্ছিল, কিন্তু আমার কথা শুনে রাগে তার চোখগুলো নিমিষেই লাল হয়ে গেলো।


আমার দিকে ভয়ানক রাগি চোখে তাকিয়ে খাবারের প্লেটটা ছুড়ে মারলো আর বললো


-কি বললি আরেকবার বল?? তোর বাবার এত দম .....?? এই


একে এখুনি বুঝিয়ে দেয় ওকে কেনো এখানে আনা হয়েছে।।। ওর বাবার কলিজার মতো মেয়ের এমন হাল


করবি যেনো কোথাও মুখ দেখাতে না পারে

বলেই চলে যাচ্ছিলো!!


চলবে..



৩য় পর্ব লিংক 

https//wwwrohosmotkhahini.com

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন