আপু থেকে বউ
পর্ব
✍️ গিয়াস উদ্দিন আহাম্মাদ
**পাঁচ বছর পর**
শহরের কোলাহল থেকে দূরে একটা পাহাড়ি এলাকায় ছোট্ট একটা স্কুল। ছোট রিজভী রোদে দাঁড়িয়ে একটা চার্ট বানাচ্ছে — “আমার হিরো আমার বাবা”। তার পেছনে, ছায়ার মতো দাঁড়িয়ে এক নারী — **জারা**, এখন পুলিশ কমিশনার।
হঠাৎ... তার ফোনে নোটিফিকেশন:
> “**স্কর্পিয়ন কোড** এক্টিভ হয়েছে।”
জারার মুখ থমকে যায়।
**ঢাকার কেন্দ্রীয় জেল**
সুমিতকে ট্রান্সফার করা হচ্ছে হাই সিকিউরিটি ব্লকে। সে মাথা নিচু করে হাঁটছে। হঠাৎ এক গার্ড ফিসফিস করে বলে,
> “তোর ছেলে... আবার কোড চালু করছে!”
> সুমিত থমকে যায়, চোখে একরাশ অদ্ভুত স্নেহ আর ভয়।
**ফ্ল্যাশব্যাক – ৫ বছর আগে, গিয়াসের শেষ মিশন**
গিয়াস অ্যান্টিডোটের খোঁজে ঢুকে পড়ে সোহেলের ল্যাবরেটরিতে। সময় বেঁধে রেখেছে ৭ মিনিট।
একটা হিমঘরে রক্তাক্ত অবস্থা... গিয়াসের মায়ের মৃতদেহের পাশে একটা চিপ পড়ে আছে। তাতে লেখা –
> “**Azizul’s Son = Giyas**”
সে বোঝে—পুরো জীবন সে যাকে বাবা ভাবেছে, সে তার শত্রু সোহেল। আসল বাবা আজিজুল হক – যে মরে গিয়েছিল সত্যের পথে।
গিয়াস কাঁপা হাতে চিপ তুলে নেয়।
**বর্তমান – গিয়াস কোথায়?**
সবাই ভাবে সে মারা গেছে... কিন্তু রিজভীর ল্যাপটপে একটা ভিডিয়ো ফাইল অটো-অন হয়:
> “আমার রক্ত শেষ হয়ে যাচ্ছে... কিন্তু রিজভী, তুই যদি কোড চালাস, আমি জানব — সত্য এখনো বেঁচে আছে।”
> “...আর যদি আমার সন্তান একদিন জেনে যায়, সে শুধু রক্ত নয়... সে মুক্তির প্রতীক।”
**রিজভীর চিহ্ন**
ছোট রিজভীর হাতে আবার দেখা যায় সেই **স্কর্পিয়ন চিহ্ন**। এবার সেটা বদলে গেছে — বিষধর বিচ্ছুর বদলে দেখা যাচ্ছে **একটি চাবি**র মতো নকশা।
জারা কেঁপে ওঠে — গিয়াসের শেষ শব্দ মনে পড়ে:
> “সে আসবে... সে নতুন গিয়াস!”
**একটি রহস্যময় পেনড্রাইভ**
ছোট রিজভী জারার অফিসে ঢুকে বলে,
“মা, এটা স্কুল প্রজেক্টের জন্য পাইছি…”
জারা পেনড্রাইভ চালু করে দেখে —
> “Project: **Phoenix Rising**”
রিজভীর চোখ চকচক করে উঠে, আর মুখে এক রহস্যময় হাসি।
একটি গোপন সেলে... একটি সিলুয়েট মাথা নিচু করে বসে আছে। হঠাৎ সে উঠে দাঁড়ায় —
> “পাঁচ বছর যথেষ্ট... এবার ফিরি।”
ক্যামেরা ঘোরে, দেখা যায় — **গিয়াস বেঁচে আছে**।
> *"মৃত্যু শেষ নয়… যদি উত্তরাধিকার এখনো হৃদয়ে বাঁধন হয়ে থাকে।"
পাঁচ বছর পর।
ঢাকার এক অভিজাত এলাকায়, ঝাঁ চকচকে করপোরেট অফিসের ছাদে দাঁড়িয়ে রয়েছে এক তরুণ। মুখে স্মার্টনেস, চোখে বিদ্রোহের আগুন। তার নাম — রিজভী জুনিয়র।
তার সামনে ঝুলছে একটি প্রোজেকশন স্ক্রিন। সেখানে ঘুরছে সাদা-কালো সিসিটিভি ফুটেজ — যেখানে দেখা যাচ্ছে, একজন অচেনা মুখোশধারী ব্যক্তি একটি সরকারী সার্ভারে প্রবেশ করছে।
রিজভী চাপা গলায় বলে,
— "এরা ভাবে সব মুছে ফেলেছে… অথচ কিছুই ফুরায়নি।"
তার পেছনে এসে দাঁড়ায় জারা — এখন একজন উচ্চপদস্থ পুলিশ কমিশনার। গলায় দৃঢ়তা, চোখে অতীতের ঝলক।
— "এই খেলাটা শেষ করতে হবে, রিজভী। এবার সত্যিটা সামনে আনতে হবে।"
রিজভী হালকা হাসে।
— "আমি জানি কে ফিরেছে… এবং কেন।
"গিয়াসের পাঁচ বছরের নিখোঁজ থাকার রহস্য
একটি পাহাড়ি অঞ্চলে, গুহার ভেতরে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায় গিয়াসকে। তার শরীরে বিষক্রিয়ার চিহ্ন, কিন্তু বেঁচে আছে—বেঁচে ছিল কারণ রিজভী (বোন) তার জন্য রেখে গিয়েছিল 'অ্যান্টিডোট প্রোটোকল'।
সেই অ্যান্টিডোট এখন আরেকজনের হাতে — সুমিত।
সুমিত এখন নতুন পরিচয়ে – "মাওলা শাহ" নামে এক রহস্যময় দাতা। একদা শত্রু, এখন সহানুভূতিশীল। কিন্তু সে আসলে কি সত্যি বদলে গেছে? নাকি পুরোনো খেলায় নতুন মোড়?
জারা তাকে দেখে থেমে যায়।
— "তুমি এখনো বাঁচতে পারো, সুমিত। কিন্তু গিয়াসের জীবন এখনও তোমার হাতে কেন?"
সুমিত নরম গলায় বলে,
— "কারণ আমি জানি—গিয়াস মরলে তুমিও শেষ হয়ে যাবে।"
রিজভী হ্যাকার ডেটাবেইস থেকে একটি জেনেটিক প্যাটার্ন রিভিল করে।
— "গিয়াসের জন্ম হয়েছিল আজিজুল হক ও সোহেলের প্রেমিকা নাসরিনের মাধ্যমে। সে দুই শত্রুর উত্তরসূরি!"
জারা স্তব্ধ।
— "তাহলে গিয়াস... সে নিজেই দ্বন্দ্ব?"
রিজভী মাথা নাড়ে।
— "তাই তাকে শেষ করতে চাইছে ওরা। কারণ সে যদি বেঁচে থাকে, সিস্টেম বদলাবে।"
একটি সরকারি বৈঠকে জানা যায় — ‘স্কর্পিয়ন লেগাসি’ নামে এক হ্যাকার গ্রুপ জাতীয় নিরাপত্তা সার্ভারে ঢুকেছে।
কাউকে সন্দেহ করা হচ্ছে না—কারণ…
তারা একজনকেই খুঁজছে — গিয়াস।
জারা অফিসে বসে, হঠাৎ একটি অচেনা ফ্ল্যাশড্রাইভ পায়। চালু করতেই স্ক্রিনে একটি ভিডিও:
গিয়াস ধীরে ধীরে বলে,
— "আমি ফিরছি, জারা। এবার প্রতিশোধের জন্য না… উত্তরাধিকার রক্ষার জন্য।"
ভিডিও শেষে স্ক্রিনে ভেসে ওঠে —
“পরবর্তী লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী।”
"রিজভী জুনিয়র কাঁপা কাঁপা গলায় বলে— ‘জারা ম্যাডাম, গিয়াস ভাই… হয়তো আমাদের রক্ষা করতে নয়… ঝড় তুলতে এসেছে!’”
অবশেষে পৌঁছেছি “বাঁধন”–এর চূড়ান্ত পর্বে।
এই পর্বে থাকবে সব প্রশ্নের উত্তর, প্রতিশোধের পরিণতি, সম্পর্কের সেলাই, এবং একটি নতুন প্রজন্মের সূচনা।
হলরুমে অন্ধকার। বিশাল পর্দায় ভেসে উঠছে সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সিম্বল। একে একে আলো জ্বলে ওঠে।
গিয়াস মাইক্রোফোনের সামনে দাঁড়িয়ে। পাশে Zara, এখন পুলিশের কমিশনার।
“পাঁচ বছর আগে আমি সোহেলের রক্তে হাত ভিজিয়েছিলাম... কিন্তু আমার সত্যিকারের যুদ্ধ আজও শেষ হয়নি। আজ আমি সেই যুদ্ধের সমস্ত প্রমাণ আপনাদের সামনে তুলে ধরব।”
সবার নিঃশব্দ অপেক্ষা। একে একে স্ক্রিনে ভেসে ওঠে:
-
সোহেলের ড্রাগ চেইনের নেটওয়ার্ক
-
হাসানের মৃত্যু-ভিডিও (প্রমাণ করে আত্মহত্যা নয়, গুলি)
-
সুমিতের জবানবন্দি: “সোহেল আমাকে বলেছিল, গিয়াস আমার ভাই... ও-ই মাকে মেরেছে। ভুল বুঝে ভুল করেছি।”
জারা ও গিয়াসের সন্তানের অশান্তি
ছোট রিজভী, এখন ৫ বছরের, টেবিলের নিচে বসে হ্যাকিং প্র্যাকটিস করছে। চোখে Zara-র স্পষ্ট ভয়।
সে গিয়াসকে বলে—
Zara:
“আমরা কি আবার তাকে সোহেলের মতো বানাচ্ছি?”
Giyas:
“না। ও সিস্টেম ভাঙবে না... ঠিক করবে।”
রিজভীর হাতে একটি ছোট ডিভাইস। ও বলছে:
"বাবা, আমি পুলিশের ডাটাবেসে ঢুকে গেছি... কিন্তু এখানে তো দুর্নীতির নামও আছে!"
Zara চমকে ওঠে।
রিজভীর কোডে একটি লুকানো ভল্ডার — নাম “Skorpion Legacy”।
তাতে আছে:
-
সোহেলের অটো-মেইল:
“যদি গিয়াস আমার মৃত্যু ঘটায়... তবেই তাকে সত্য জানতে হবে—ওর মা এখনো বেঁচে আছে। কোড: AZIZ2025” -
গিয়াস স্তব্ধ। Zara চোখে জল।
গিয়াস বলে—
"আমার মা বেঁচে আছে... আর আমি জানতাম না?"
রিজভীর কোড ব্যবহার করে তারা পৌঁছে যায় এক মরুভূমি ক্যাম্পে—সেখানে বন্দি একজন বৃদ্ধা, চুল সাদা, চোখে এখনও আগুন।
তিনি চুপ করে Zara-র মুখের দিকে তাকিয়ে বলেন—
“তুমি কি গিয়াসের বউ?”
Zara হাঁ করে তাকিয়ে থাকে।
"তবে বলো, আমার ছেলেকে আমি শেষবার কবে ছুঁয়েছিলাম?"
সোর্স কোডের মধ্যে ট্র্যাকিং ডিভাইস ছিল।
একদল দুর্নীতিগ্রস্ত গোয়েন্দা হানা দেয় ক্যাম্পে।
তখন রিজভী ছোট্ট রিমোট টিপে সব সার্ভার উড়িয়ে দেয়।
প্লাস্টিক বোমায় ঝলসে যায় পুরো ক্যাম্প, কিন্তু গিয়াস-জারা-মা পালাতে পারে।
শেষবার রিজভীর গলা শোনা যায়:
"ভাই... বাঁচলে আমার নামে একটা প্রতিষ্ঠান খুলিও—Skorpion Killer Institute..."
ঢাকায় নতুন করে গড়ে ওঠে “Skorpion Institute for Ethical Hackers”
Zara—আইজিপি
Giyas—ডিরেক্টর অফ ইথিক্যাল সিকিউরিটি
রিজভী (ছেলে)—৭ বছর বয়সেই প্রথম সরকারি হ্যাক প্রতিরোধ করে
এক সাংবাদিক প্রশ্ন করে—
“গিয়াস, আপনি কি এখনও প্রতিশোধে বিশ্বাস করেন?”
গিয়াস:
“না। আমি এখন বিশ্বাস করি শুধু একটা জিনিসে—
বাঁধন দিয়ে মানুষকে বেঁধে রাখা যায় না...
কিন্তু ভালোবাসা দিয়ে মানুষকে মুক্ত করা যায়।”
🔚 শেষ দৃশ্য:
ছেলে রিজভী স্কুল প্রজেক্টে লিখছে:
“আমার বাবা একজন হিরো ছিল।
আমার মা ছিলেন মশাল।
আর আমি?
আমি সেই আগুন যা শত্রুর বাঁধন পোড়াবে...”
“বাঁধন ছিন্ন হল…
কিন্তু রক্ত, প্রেম আর ন্যায়বিচারের বাঁধন, এখন এক নতুন প্রজন্মের হাতে।”
💌সমাপ্তি
📣 পাঠকের জন্য প্রশ্ন:
-
রিজভী কি ভবিষ্যতের নায়ক হবে, নাকি আবার বাঁধনে জড়াবে?
-
Skorpion Legacy কি সত্যিই শেষ?
-
Zara আর Giyas কি একদিন শান্তির জীবন পাবে?
এই ছিল “বাঁধন”–এর শেষ,
তবুও… শেষ মানে কি সত্যিই শেষ? 🎭
আপনাদের এই গল্পের গ্রহ থাকলে “Season 2: Skorpion Legacy” শুরু করা যেতে পারে!
0 Post a Comment:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন