আপু থেকে বউ
পর্ব ৩
লেখা: গিয়াস উদ্দিন আহাম্মাদ
রাত ১টা।
জারা ঘুমিয়ে পড়েছে। গিয়াস চুপচাপ বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ায়।
সে ধীরে ধীরে আলমারির গোপন চেম্বার খুলে একটা ছোট বাক্স বের করে।
বাক্সের ভিতরে থাকা পুরনো চিঠিগুলোতে ধুলোর স্তর।
তবে একটির খাম ভাঙা—যেটার উপরে লেখা, "S.C. will act soon. Burn after reading."
গিয়াস সেটা আবার আগের জায়গায় লুকিয়ে রাখে।
তার চোখে একধরনের তীক্ষ্ণতা… যেন সে কিছু জানে, কিছু লুকাচ্ছে।
সকাল জারা ডিপার্টমেন্টে যায়।
ওসি আকবর তাকে ডেকে নেয় কনফারেন্স রুমে।
— “তোমার দেওয়া ভিডিও, অডিও আমরা এনালাইসিস করেছি। গলার সেই ব্যক্তির নাম সোহেল চৌধুরী, পুরনো ক্রিমিনাল রেকর্ডে আছে। তবে মুখ দেখা যায়নি।”
— “আমরা কি তার ছবি পেতে পারি?”
— “চেষ্টা করছি… তবে সাবধান, এরা খেলো না।”
জারার সহকর্মী এসআই সুমিত দরজা খুলে ভেতরে আসে।
হালকা হাসি দিয়ে বলে,
— “ম্যাডাম, আপনি চাইলে আমি লোকেশন ট্র্যাকিংয়ে হেল্প করতে পারি।”
জারা মাথা নাড়ে।
— “থ্যাঙ্কস, সুমিত। তুমি খুব রিলায়েবল।”
পাঠক জানে না, সুমিত হাসির আড়ালে কী ভয়ঙ্কর ছায়া লুকিয়ে রেখেছে...
অন্যদিকে গিয়াস বাসায় ফিরে এসে তার ল্যাপটপে বসে।
অন্য আরেকটি পেনড্রাইভ খুলে সে একটি ভিডিও চালায়।
ভিডিওতে দেখা যায়—
সোহেল চৌধুরী স্পষ্টভাবে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে বলছে:
“তোমার বাপ এতদিন ধরে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করেছে। এখন সময় বদলাবার।
একটা দুর্ঘটনা হবে—তুমি জানবা না, কারা করল।
কিন্তু গিয়াস, তুমি যদি জিভ বেশি চালাও, তোমার বউও থাকবে না।”
গিয়াস ভিডিও বন্ধ করে।
তার মুখে ভয় নেই… বরং জ্বলন্ত ক্রোধ।
সে জানে, জারাকে এ ভিডিও এখনই দেখানো ঠিক হবে না।
সন্ধ্যা জারা আর গিয়াস ছাদে বসে।
আকাশে অন্ধকার নামছে। বাতাস ভারী।
— “তুমি সারাদিন কি করেছো?”
— “একটা পুরনো বই পড়ছিলাম,” গিয়াস হেসে উত্তর দেয়।
জারা মনেই করে না কিছু সন্দেহ করার মতো কিছু আছে।
তবে তার ফোনে একটা বার্তা আসে—
"Beware of the closest. They may burn you first."
(সাবধান থাকো, যারা সবচেয়ে কাছে... তারাই আগে পোড়ায়।)
জারা চমকে যায়। নম্বর আননোন।
— “কিছু হয়েছে?”
— “না, কিছু না,” বলে ফোন অফ করে দেয়।
গভীর রাত জারার ঘুম ভেঙে যায় এক অদ্ভুত শব্দে।
বের হয়ে দেখে, গিয়াস রুমে নেই।
সে নিচে নামে—দেখে গিয়াস কাউকে ভিডিও কলে কথা বলছে।
দূর থেকে দেখা যায় ভিডিও স্ক্রিনে সোহেল চৌধুরীর সম্পূর্ণ মুখ!
গালে পুরনো কাটার দাগ, চোখে চাপা ভয় আর অভিজ্ঞতার ছাপ।
“তুমি এখনো সিদ্ধান্ত নিওনি?”
“আমার সময় দরকার,” গিয়াস ফিসফিস করে বলে।
“তুমি জানো, সময় শেষ হয়ে আসছে। জারাকে সরিয়ে ফেল… না হয় আমরা সরিয়ে ফেলবো।”
জারা দূর থেকে দেখে—কিন্তু চেহারা ভালোভাবে দেখতে পায় না।
গিয়াস হঠাৎই ফোন বন্ধ করে দেয়, ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকায়।
কিন্তু জারা তখন ছায়ায় মিশে গিয়েছে।
পরদিন ওসি আকবর ডেকে নেয় জারাকে।
— “নতুন একটা ফুটেজ পেয়েছি। সোহেলের স্পষ্ট মুখ।”
— “আমাকে দেখান।”
ফুটেজে দেখা যায়—একটা গ্যারেজে দাঁড়িয়ে আছে তিনজন। একজন সোহেল।
জারা তাকিয়ে থাকে, কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পারে না সে এই চেহারা কোথায় দেখেছে।
পাঠক কিন্তু জানে—এই চেহারা সে আগেই দেখেছে... তবে স্বপ্নে নয়, বাস্তবেই, গিয়াসের ল্যাপটপে।
গল্পের মোড় ঘোরানো মুহূর্ত
ওসি আকবর নতুন ডিউটির দায়িত্ব দিচ্ছেন।
— “সোহেলকে ধরার জন্য তুমি আর এসআই সুমিত যৌথভাবে কাজ করবে।”
জারা অবাক হয়।
— “আমি একা কাজ করতে চাই...”
— “না, এখন সুমিতকেই দায়িত্ব দেওয়া হলো।”
দরজা বন্ধ হওয়ার পর সুমিত ধীরে ধীরে ফোনে মেসেজ করে:
“সে এখনো কিছু বুঝে ওঠেনি। পরের ধাপ কখন?”
মেসেজের ওপরে যে নামটা ঝলকে উঠে আসে…
S.C.
চলবে...
🔥 টুইস্ট রিভিল
-
গিয়াস নিজেই সোহেলের সঙ্গে কোনোভাবে যুক্ত ছিল বা ব্ল্যাকমেইল হচ্ছিল।
-
সোহেল চৌধুরীর মুখ আমরা এখন দেখেছি, কিন্তু জারা এখনো চিনতে পারছে না।
-
এসআই সুমিত সোহেল চৌধুরীর পেইড ইনফরম্যান্ট, কিন্তু এখনো কেউ জানে না।
-
পরবর্তী পর্বে জারা ধীরে ধীরে গিয়াসকে সন্দেহ করতে শুরু করবে… এবং সুমিতকে বিশ্বাস করবে—যা আরও ভয়ঙ্কর পরিণতির দিকে নিয়ে যাবে।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন