আপু থেকে বউ
পর্ব ৬
লেখা: গিয়াস উদ্দিন আহাম্মাদ
৭
গিয়াসের চোখ স্থির।
সে নিশানা করে ট্রিগারে চাপ দেয়—
“ডাম!!”
সোহেলের কাঁধে গুলি লাগে, সে কাঁপে উঠে, রিমোট হাত থেকে পড়ে যায়!
রিমোট মাটিতে পড়ে চারদিক লাল আলো জ্বলে ওঠে—টাইমার: 00:10… 00:09…
গিয়াস সোহেলকে ফেলে টান দিয়ে জারাকে ধরে:
— “দৌড়াও!!”
জারা-গিয়াস ছুটে বের হয়।
দরজার বাইরে লাফিয়ে পড়ার ঠিক এক সেকেন্ড পর—
“ব্বুম!!”
পুরো রুম ধ্বংস। কংক্রিট উড়ে যায়, শকওয়েভে আশপাশ কাঁপে।
জারা পড়ে যায় গিয়াসের গায়ে।
হাঁপাতে হাঁপাতে গিয়াস বলে:
— “বাঁচলে… আবার বিশ্বাস করবা?”
জারা নিরুত্তর। কিন্তু তার চোখে একটা শঙ্কা গলে গিয়ে আশা হয়ে যায়।
সুমিতের মুখোশ খুলে যায়
ডিপার্টমেন্টের শাওন বলে:
— “ম্যাডাম, আপনি যে ফাইল চেয়েছিলেন, সেটা মিলেছে।
একটা ফাইল আপনার ডেস্কে রাখছি—‘S.H. Lineage’।”
জারা দেখে, সুমিতের জন্ম সনদে ‘হাসান চৌধুরী (সোহেলের ভাই)’ লেখা।
— “ও... তো সুমিত হলো হাসানের ছেলে?”
জারা অফিসে ফিরে সুমিতকে কফির কাপ দিতে গিয়ে দেখে, তার হাতা উঠেছে…
একটি উল্কি – একটি বিষাক্ত বিচ্ছু (Scorpion)!
সোহেলের গ্যাংয়ের চিহ্ন!
জারা এবার বুঝে যায়:
সুমিত “সিস্টেম” এর মধ্যে থেকেই ধ্বংস করছে সিস্টেমকে।
গিয়াসের ট্র্যাজিক পাস্ট (ফ্ল্যাশব্যাক)
ছোট গিয়াস মাটিতে কাঁদছে।
দেয়ালের ওপাশে এক পুরুষ কণ্ঠ—
“তোমার মা চলে যাবে... কারণ সে বিশ্বাসঘাতক।
আর তুই যাবে তোর মায়ের ভালোবাসার শত্রুদের কাছে। তোর নিরাপত্তার জন্য।”
সোহেল গিয়াসের মাকে গুলি করে।
রহমত এসে গিয়াসকে নিয়ে যায়।
“এই সত্য কখনো জানতে দিবি না! বড় হলে সে আমাদের ধ্বংস করবে!”
গিয়াস বড় হয়েও সবকিছু মনে রেখেছে।
সে অপেক্ষা করেছে... প্রতিশোধের জন্য, নয়তো সত্যের জন্য।
নতুন অ্যালায়েন্স গঠিত হয়
গিয়াস ও জারা খুঁজে পায় রওশন করিমের গোপন ডায়েরি।
ডায়েরিতে আছে ৫ জন অফিসারের নাম – যাদের কেউ কেউ এখন পুলিশের উচ্চপদে!
তাদেরই কেউ রহমত-সোহেল দ্বন্দ্ব তৈরি করেছিল।
তারা এক কিশোর হ্যাকার "রিজভী" কে খুঁজে বের করে।
সে বলে—
— “সুমিত স্যারের ফোনে ক্রিপ্টো-ওয়ালেট আছে। গত ১ মাসে ১৮ লাখ টাকা ঢুকেছে, পাকিস্তানি নম্বর থেকে।”
— “এই সিস্টেমের ভিতরেই শয়তান!”
ভয়ঙ্কর কল... গাদ্দার বাবা?
পর্বের চূড়ান্ত দৃশ্য।
সুমিত ফোনে কথা বলছে।
— “স্যার, আপনার মেয়ে এখনই মরবে… যেমন আপনি আমার বাবাকে মেরেছিলেন!”
স্ক্রিনে দেখা যায়:
জারার বাবা, রিটায়ার্ড অফিসার রহিম চৌধুরী – একটা চেয়ারে বাঁধা! মুখে রক্ত, চোখে শঙ্কা!
স্ক্রিন কাঁপে।
জারা দূরে দাঁড়িয়ে... সব শুনছে!
তখনই ফোনে তার বাবার কণ্ঠ—
“জারা, এই প্রথম গিয়াসকে বিশ্বাস করো…
সে ছাড়া তুমি বাঁচবে না।”
জারা ফোনে তার বাবাকে বলতে শুনে—
"এই প্রথম গিয়াসকে বিশ্বাস করো... সে ছাড়া তুমি বাঁচবে না!"
রাত সাড়ে ১২টা।
জারা ঘরের কোণে বসে। সামনে গিয়াস দাঁড়িয়ে।
ভেতরে এক অদ্ভুত নিঃশব্দতা।
গিয়াসের গায়ে পোঁড়া ধুলা, চুল এলোমেলো। জারার ঠোঁটে রক্ত।
গিয়াস ধীরে বলে—
“জারা… ওরা তোর বাবাকে কোথায় রেখেছে, আমি জানি।”
জারা উঠে দাঁড়ায়। কণ্ঠে যেন আগুন:
“তাহলে দেরি কেনো?
আজ রাতেই আমরা তাকে ফিরিয়ে আনব।
আজ রাত… শিকল ভাঙার রাত।” রিজভী হ্যাকার প্ল্যান দেয়
রিজভী, ১৭ বছরের টিনএজার, সামনে কম্পিউটার খুলে বসে।
“ওদের লোকেশন ট্রেস করতে পারিনি। কিন্তু ‘ডিপ ব্লু নেটওয়ার্ক’-এর একটা অডিও চ্যাট লগ পেয়েছি।”
“সেখানে একজন বলেছে: ‘পুরানো মিল ঘরের নিচে, আগুনে পুড়ে যাবে রহিম চৌধুরী।’”
গিয়াস কাঁপা গলায় ফিসফিসায়—
“ওরা ওনাকে আজই মেরে ফেলবে…”
মিল ঘরের অভিযানে পুরনো একটি ময়লা মিল ঘর। চারপাশে কাঁটা তার, রক্ষী।
আকাশে বজ্রপাত।
জারা, গিয়াস ও রিজভী তিনজনে রেইডে যায়।
জারা হাতে সাইলেন্সার লাগানো গ্লক।
গিয়াস কোমরে ছুরি, কাঁধে ফার্স্ট-এইড ব্যাগ।
রিজভীর চোখে নাইট ভিশন গগলস।
তারা চুপিচুপি ঢুকে পড়ে। রক্তের সিম্বল
ঘরের একাংশে বাঁধা জারার বাবা। চোখ বন্ধ, নিঃশ্বাস ধীর।
সুমিত দাঁড়িয়ে আছে – হাতে বড় সিরিঞ্জ। সে বলে—
“এই ইনজেকশনে যাবে না... যাবে রক্তের বিচার দিয়ে।”
ঠিক তখনই জারা ঝাঁপিয়ে পড়ে!
এক গুলি, দুই ঘুষি—সুমিত পিছিয়ে যায়।
কিন্তু এক দেহরক্ষী গিয়াসের দিকে ছুরি ছুড়ে মারে—
গিয়াস বাঁধন কেটে বাবাকে ছাড়াতে গিয়েই কেটে ফেলে নিজের হাত!
রক্তে ভিজে যায় বাঁধন। জারা চোখে জল ফেলে বলে—
“তুমি… নিজের রক্ত দিয়ে বাবাকে ছাড়ালে…”
গিয়াস হাসে। চোখ ঝাপসা। বিচ্ছু উল্কির পুনরাবৃত্তি
সুমিত আবার হামলা করে।
জারা তার হাতা ছিঁড়ে ফেলে—সবার সামনে বিচ্ছু উল্কি বেরিয়ে পড়ে।
“তুমি হাসানের ছেলে! তুমিই সেই বিষাক্ত শিকারি… তুমি তো শুধু প্রতিশোধ চেয়েছিলে!”
সুমিত চিৎকার করে:
“তোমার বাবা হাসানকে মেরেছিল! আমি শুধু রক্ত ফেরত নিতে এসেছি!”
গিয়াসের দ্বন্দ্ব – শেষ করবে, নাকি ছাড়বে?
গিয়াস সুমিতকে কাবু করে ফেলে।
ছুরির ফল ঠিক সুমিতের গলায়।
জারা চিৎকার করে:
“গিয়াস, করো না! তুমি আর ওদের মতো হয়ে যেও না!”
গিয়াস দাঁড়িয়ে থাকে… হাত কাঁপে।
“আমার মা… আমার জীবন… আমার শৈশব সব কেড়ে নিয়েছে ওরা।
কিন্তু… আমার ভালোবাসা আমাকে পশু বানাতে পারবে না।”
সে ছুরি ফেলে দেয়। চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ে অশ্রু।সোহেলের ভয়েস ও নতুন প্যাঁচ
একটি রেকর্ডার বাজে… সুমিতের পকেট থেকে:
“সুমিত, গিয়াসকে মারো না।
সে আমার রক্ত…
কিন্তু আমি তার চোখে আমার মৃত্যু দেখতে পাই।”
জারা-গিয়াস থমকে যায়।
জারা ফিসফিসিয়ে বলে—
“সে কি... বুঝে গিয়েছে… গিয়াস ওকে ক্ষমা করবে না?”
ক্লাইম্যাক্স ক্লিফহ্যাঙ্গার: দুঃস্বপ্নের চক্র ফেরে?
সকাল।
একটি গ্যারেজের ভিতর, অন্ধকারে একজন লোক এসে দাঁড়ায়।
সে মোবাইলে কারও সাথে বলে:
“তুমি গিয়াসকে বাঁচিয়ে ফেলেছো, জারা।
কিন্তু তোমার সত্যিকারের শত্রু আমি...
কারণ আমি সোহেলের ভাই নই।
আমি... তোমার হারানো ভাই, রাহাত।”
স্ক্রিন ব্ল্যাক।
"জারা অজ্ঞান হওয়ার আগে দেখে... গিয়াস সুমিতের গলা কাটছে না, বরং তাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে!"
চলবে....
0 Post a Comment:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন