রাত_গভীর সাহিত্য_ডাইরি পর্ব_৩

রাত_গভীর 

সাহিত্য_ডাইরি 

পর্ব_৩



তখন দেখে একটা খুব সুন্দর মেয়ে। সম্ভব প্রিন্সের চেয়ে বয়সে ৩,৪ বছরের ছোট হবে।

হাবিব বলেঃ এটা হলো ইনতিয়াজ(প্রিন্স) এর বোন।আর প্রিন্সের সবচেয়ে বড়ো দূর্বলতা! জীন মেয়ে টির নাম হচ্ছে শাম্মি। জান্নাত আর সুমি আবার খেয়াল করে দেখে। আরে এই মেয়েকে কলেজ এ দেখে ছিলাম। ইন্টারমিডিয়েট এ মেয়েটি বিজ্ঞান বিভাগের ছাএী ছিল।

লাবু বলেঃ আরে এ কি কান্ড,

জীন ও দেখি মানুষের লগে পড়া লেখা করা শুরু করছে।

অর্ক বলেঃ তাহলে এখন আমারা জেনে গেছি প্রিন্সকে আমাদের কাছে আনতে হলে তার প্রাণের প্রিয় বোন শাম্মি ই যথেষ্ট। সুমি শোন হাবিব এর কাজ কমপ্লিট। এবার কিন্তু সুমি তোর পালা!

সুমি বলে ঃ ওকে লিডার।

অর্ক বলেঃ ভালো করে দেখ।শালার প্রিন্স আসে পাশে আছে নাকি?

সুমি চোখ জোড়া বন্ধ করতেই দেখার চেষ্টা করছে আশেপাশে অশরীর বা প্যারানরমাল কিছু আছে নাকি? সুমি হঠাৎ দেখতে পেল কেউ একজন খুব চেষ্টা করছে ঘরের ভেতর প্রবেশ করার।কিন্তু সে আগন্তুক চাইছে না সে সাজিয়ে রাখা বৃত্তে তার প্রবেশ হোক!

অন্য দিকে এদের সবার কান্ড দেখতে দেখতে রিনি ঘুমিয়ে পড়লো।

রাবেয়া বলেঃ রিনি এই রিনি!!!!ঘুমাই গেলি নাকি? সারাদিন শুধু ঘুম।আমরা আছি তুর চিন্তায়। আর তুই পড়ে পড়ে ঘুমাচ্চিস?তুরে তো ঘুমের মধ্যে পানিতে ফেলে দিলে ও তুই জানবি না।

কামাল বলেঃআহ! রাবেয়া। মেয়ে টা কে কেন বকাবকি করছো?রিনি মা তুই ঘুমিয়ে পড়।তুর মার স্বভাব ই এমন জানস তো।সারাদিন খালি বকবক করা। তুমি যে বলছো পানিতে ফেলে দিলে ও রিনি জানতে পারবেনা। ওর সাথে এর চেয়ে মারাত্মক কিছু হয়েছিল এবং হচ্ছে সে তো তার ও কিছু জানে না।

না জানি আমার কোন পাপের শাস্তি আল্লাহ এইভাবে আমার আদরের মেয়ে কে দিচ্ছে।

কথায় আছে, মা বাবা কোন দোষ করলে নাকি তার প্রভাব সন্তানের উপর পড়ে।

কামার আবার বলেঃ আর রাবেয়া, একটা জিনিস লক্ষ্য করু,রিনি কিন্তু আগের মতো গুলুমুলু নেই। আমার সুন্দর দেখতে মেয়ে টার শরীর অার স্বাস্থ্য কেমন জানি হয়ে গেছে। শালা,জীন ইনতিয়াজ(প্রিন্স) কে হাতের কাছে পাইলে হবে।শেষ করে দিবো শালা কে।রাতের পর রাত, রাত যখন গভীর হয় আমার মেয়ে সাথে সে, আমার মেয়ে রিনির অজান্তেই এক নষ্টামি খেলায় মেতে উঠে। আমি না রাবেয়া একটা জিনিস কিছু তেই মিলাতে পারছিনা।রাতে এতকিছু হয় কিন্তু রিনি কিছুই জানে না কেন?

আসলে রাবেয়া মেয়ে র স্বাস্থ্যের দিকে একদম খেয়াল করেনি।কামাল বলার পর লক্ষ্য করে দেখে। আসলেই কামাল যা বলছে ভুল কিছু বলেনি। এরপর

রাবেয়া বলেঃ ওগো। আসল ব্যাপার হচ্ছে, আমরা সবাই টেনশনে আছি।খাওয়া,দাওয়া রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।আর নবাবজাদি ঘুমাচ্ছে তাই দেখে বকে দিছিলাম।আর একটা কথা কি জানো,রিনির ও জেগে থাকতে হবে, রিনির ও জানা দরকার কি হয় ওর সাথে রাতে আঁধারে।আর রাত যখন ঠিক গভীর হয়ে আসে।কামাল তুমি একটা জিনিস বুঝতে পারছো না আর আমাকে দেখ!

আমি আরও হাজার টা প্রশ্নের উত্তর পাচ্ছি না।

রাহাত হুজুর বলেঃ আরে তোমরা বউ জামাই ঝগড়া বিবাদ কেন বাধাচ্ছো?রিনি এখন ঘুমাক।প্রিন্স আসলেই।এমনিতে ও স্বজাগ হবে।আর তোমাদের সব প্রশ্নের উত্তর প্রিন্স কে হাতের মুঠোয় করে নিতে পারলে পেয়ে যাবে।আর কামাল আপনি আর ভাবি আর ঝামেলা করিয়েন না।লাবু ভাবির মত চুপ করে বসে থাকেন।

লাবু বলেঃ হুহ্ কি করবো?কি বলবো? বুঝতে না পেরে চেয়ে আছি। আপনাদের সবার দিকে।

অর্ক বলে উঠলো ঃসুমি তোর কাজ শেষ। জান্নাত তোর কাজের পালা।কাজ শুরু করে দে।

জান্নাত বলেঃতাহলে তুরা সবাই চুপ থাক।আমি জীন রাজা কে ডাকার চেষ্টা করি।

জান্নাত অনেকক্ষণ চোখ জোড়া বন্ধ করে জীনের রাজার নাম ধরে ডাকে। জীনের রাজা রশিদ। আপনি কি আমাকে শুনতে পারছেন?

শুনতে পেলে আমার ডাকে সাড়া দিন।আমার খুব জরুরি কাজে আপনাকে দরকার। বেশ কিছু সময় চলে গেল ।আর জান্নাত হতাশ হয়ে যাই। কেন সাড়া দিচ্ছে না জীন রাজা।

রাহার হুজুর বলেঃ ধৈর্য রাখতে। তিনি আরও বলেছেন,

কথায় আছে, আল্লাহ পাক ধৈর্য শীল ব্যক্তিকে বেশি পছন্দ করে।

জান্নাত আবার ধৈর্য ধরে আবার ডাকতে শুরু করে।

আলহামদুলিল্লাহ বলে উঠে জান্নাত।

রাহাত হুজুর বলেঃ আপনার ডাকে কি সাড়া দিচ্ছে?

জান্নাত বলে ঃ উনি এখন আমাদের সামনে আসবেন। আর যথা সম্ভব সাহায্য করবেন বলেছে।

একটু পর জীন রাজা।উপস্থিত হয়ে গেল।

জীন রাজা রশিদ বলে ঃ কী হলো জান্নাত?সমস্যা টা বলো?আর কি করতে পারি তোমার জন্য?

জান্নাত একে একে সব বলে।

আর হাবিব বলেঃ ওই জীন প্রিন্স এর ছবি আমার স্ফটিকে আছে। দেখেন যাহা পনা????

রাজা রশিদ যেন অবাকের চূড়ান্ত সীমাই পৌঁছে যায়।

রাজা বলেঃ এটা আমার ছেলে প্রিন্স ইনতিয়াজ।সে এত নিচু কাজ করতে পারে আমি ভাবতেই পারছিনা

আমি ওকে সুশিক্ষা দিয়েছি।নিশ্চয়ই কোন কারণ আছে না হয় সে এমন করার কথা নয় বরং প্রশ্ন ও উঠে না।

রাজা রশিদ বেশ কয়েক বার তার ছেলে কে ডাক দেই। কিন্তু সাড়া দিচ্ছে না।

তখনই হাবিব বলেঃজীন যাহা পনা গোস্তাকি মাফ করবেন। আমরা আপনার ছেলের দূর্বলতা জানি।আর তার দূর্বলতা তার আদরের বোন শাম্মি।শাম্মি তো আপনার মেয়ে।যদি আপনার মেয়ে কে এখানে আনা হয় তাহলে প্রিন্স নিজে থেকে ধরা দিবে।

রাজা রশিদ বলেন ঃ আমি ও চাই সে তোমাদের কাছে আসুক।

রাজা রশিদ তার মেয়ে শাম্মি কে ডাক দেই। সাথে সাথে চলে আসলো।

হাবিব মনে মনে বলে বাহ! মেয়ে টা দেখি বাবার বাধ্য মেয়ে। হাবিব আরেক পলকে শাম্মির দিকে ফিরে তাকাই।

হাবিব মনে মনে বলছে ঃবাহ! বেশ সুন্দর জীন মেয়ে টা।কোমর অবধি ছুয়ে আছে কালো কালো চুল। আর গাঁয়ের রং হালকা গোলাপি। যেন আল্লাহ ওকে বানানোর সময় দুধের সাদা রঙের মধ্যে হালকা গোলাপি রঙ ডেলে দিয়ে ছিল ।বেশ সুন্দর। আর নীল রঙের শাড়িতে আরও আকৃষ্ট করেছে। এককথায় মেয়ে টা যেন একটা অপরূপা সুন্দরী।

তখনই,

জান্নাত কে দেখে শাম্মি অবাক।

শাম্মি বলেঃবাবা উনি তো আমার কলেজ এর batchmate।!!! আমি বিজ্ঞানে ছিলাম আর জান্নাত ব্যবসায়ি বিভাগে।

উনি কেন এখানে?আর তোমার না এখন রেস্ট নেওয়ার কথা ছিল। তুমি কেন এখানে? আর এই মানুষ গুলো কারা?আর আমরা এই বৃত্তের ভেতরে ঢুকে আছি কেন?

রাজা রশিদ বলেন ঃ মা তুই এতগুলো প্রশ্ন করতে থাকলে উত্তর কেমনে দিবো?

হঠাৎ অর্ক বলেঃ আমি বলছি আপনাকে পুরো ব্যাপার।পুরো ব্যপার শুনে,

শাম্মি যেন অবাক হয়ে যাই। আমার ভাই ইনতিযাজ এমন করতেই পারেনা।It's just impossible....

অর্ক বলেঃ আপনার ভাই এমনটাই করেছে। তাই আমাদের মেয়ে রিনির এই পরিস্থিতির স্বীকার।

শাম্মি বলেঃwait wait... আপনারা এতক্ষণ মেয়ে মেয়ে বলে কাহিনী টা বুঝালেন? নামটা বলেননি কেন?রিনি আমার পরিচিত। মেয়ে টা অনেক ভালো। আমি মাঝে মধ্যে ওকে দেখতেই আমার রাজ্য থেকে এখানে আসতাম। রিনি আমাকে একদিন বিপদ থেকে রক্ষা করে ছিলো।তাই রিনির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।আমি ওকে সাহায্য করবো।আর আমিও জানতে চায় আমার ভাই কেন এমন করছে? আমি ভাইকে ডাক দিচ্ছি।

রাজা বলেঃ আমি ডাকলাম। তুর বজ্জাত, হতচ্ছাড়া, কেয়ার লেস,বান্দর ভাই সাড়া দেয় নি।

শাম্মি অনেকক্ষণ ডাকলো।সে জানে তার ভাই কারো ডাকে সাড়া না দিলে ও তার ডাকে সাড়া দিবে। কারণ প্রিন্স তার বোনকে তার প্রাণের ছেয়ে বেশি ভালবাসে। আসলে ভাই বোনের ভালোবাসা গুলো এমনই হয়ে থাকে।


তখন সবাই দেখে। লালচে বৃত্ত টি আস্তে আস্তে সেই ঘরে প্রবেশ করছে। একটু পরে,লালচে বৃত্ত টি জীন প্রিন্স এর রুপ নেয়। মাথা নিচু করে বসে আছে প্রিন্স।

আর অন্য দিকে প্রিন্স রুমে প্রবেশ করার সাথে সাথে রিনি জেগে ওঠে।

আর প্রিন্স কে দেখে আঁতকে ওঠে।এতো মনে হচ্ছে স্বপ্নের সেই মানুষ।

রিনি মনে মনে বলছেঃ এই ছেলে তাহলে প্রিন্স।এই ছেলে তো আমার স্বপ্নে আসতো।আর স্বপ্নে দেখতাম আমার সাথে খুব ঘনিষ্ঠ হয়ে যেতো। আর যার ফলে মিলন হয়ে যায় ।

তবে আমি যখন চোখ জোড়া খুললি,তখন কিছুই দেখতে পেতামনা। আর স্বপ্নে দেখতাম প্রতিদিন আমাদের মিলন হতো।

আচ্ছা, এমন মিলন স্বপ্নে হলে বাস্তবে কি কষ্ট হয়? আমার মাঝে মধ্যে অনেক কষ্ট হতো।তাই মাঝে মধ্যে বলে উঠতাম, প্লিজ আমাকে ছেড়ে দাও।আমার কষ্ট হচ্ছে।

আর মাঝে মধ্যে দেখতাম আমি কোন এক সুখের দুনিয়ায় ভেসে যাচ্ছি। আর অনেক ভালো লাগা কাজ করতো!

আচ্ছা তাহলে কি যা স্বপ্নে দেখতাম! এগুলো কি আমার সাথে বাস্তবে হতো?

আর অন্য দিকে প্রিন্সের অবস্থা কিছু টা এমন যে,সে

তার মনে মনে খুব রাগ জারছে। তার বোন শাম্মি যদি না ডাকতো তাহলে সে কোন ভাবেই এখানে আসতো না।সে বোনের জন্য সব করতে পারে। এমনকি নিজের জীবন দিতে দ্বিতীয় বার চিন্তা করবেনা।এতটাই বোন শাম্মিকে ভালোবাসে।

আজ প্রিন্সের,

আত্মসম্মানে খুব লাগছে। কারণ সে একটা রাজ্যের ভবিষ্যতের রাজা।আর অপার শক্তির অধিকারি।মা বাবা ২ জনের শক্তি ই তার কাছে আছে।

তার পর ও কিছু মানুষ এর সামনে অপরাধীর মতো মাথা নিচু করে বসে থাকতে হচ্ছে। বরাবরই তার ইগো তে লাগছে!

তখনই

প্রিন্স মনে মনে বলছে ঃ আমার কি এমন দোষ ছিলো। যে আমার বাবা আর বোনের সামনে আমার আত্মসম্মান একদম মাটির সাথে মিলিয়ে দিলো এই মানুষ গুলো ।আর যদি এই বৃত্তের ভেতরে না থাকতাম তাহলে ওদের সবাইকে মেরে শেষ করে দিতাম।আর এই রিনি কে ও শেষ করে দিতাম।

অনেক্ক্ষণ ধরে চেষ্টা করছিলাম,এই বাসায় প্রবেশ করার। কিন্তু অর্ক,আর রাহাত হুজুর দোয়া পানির কারণে বারবার ব্যর্থ হয়েছে। আর রিনি নামাজ ঘরে থাকাতে তার উপর ভর করতে পারিনি।

আসলে আসল কথা কি জানেন, মানুষ যত দোষ করুক না কেন অন্যের দোষ বেশি দেখতে পাই।আর নিজেকে ধোঁয়ার তুলসী পাতা মনে করে।

ঠিক প্রিন্স ও নিজেকে ধোঁয়ার তুলসী পাতা মনে করচ্ছে।একটা মেয়ের জীবন নষ্ট করে ও তার যেন একটু ও অনুতপ্ত হচ্ছে না।

লাবু বলেঃ আচ্ছা রাবেয়া ভাবি, এই প্রিন্সের চোখ এত লাল হয়ে গেছে কেন? আর মনে হচ্ছে যেন বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারলেই আমাদের সবাই কে মেরে ফেলতো।

রাবেয়া বলে ঃ প্রিন্স কি করতো জানি না।তবে আমি হাতের কাছে পেলে। বেয়াদব কে আস্ত রাখতাম না।

কামাল বলে ঃ আহা! শান্ত হও।দেখি ওরা কি করে।

জান্নাত বলেঃপ্রিন্স সুন্দর করে বলবে কি কারণে রাত যখন গভীর হতো এমন অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হতে?না হয় আমাদের জানা আছে, তোমাকে ঠিক কি করতে হবে।

সুমি বলেঃ ভালো ভালো, সব স্বীকার করে নাও।

হাবিব বলেঃ অন্যতাই তোমার সাথে আমরা এমন কিছু করবো যা তুমি ইমাজিন ও করতে পারবে না। অবশ্য স্বীকার করলে শাস্তি কমে যাবে।

রাজা মশাই বলেঃ সব সত্যি কথা বল।তুরে সুশিক্ষা দিয়েছিলাম কেন এমন আহাম্মক এর কাজ করলি?

শাম্মি বলেঃ ভাই তুর বিয়ে করতে মন চাইলে আমাকে বলতি?মা বাবার সাথে এই নিয়ে কথা বলতাম।আর আমাদের রাজ্যের সেরা সুন্দরী তুর বউ করে আনতাম।উওর দে????

অর্ক বলেঃ প্রিন্স

তুমি কি জনো না রিনির একটা ভবিষ্যত আছে!

কেন মেয়েটার জীবন অল্প বয়সে ধ্বংস করে দিচ্ছো।

হঠাৎ প্রিন্স বলে উঠেঃ উফ! আপনারা কিন্তু আমাকে বড্ড জ্বালাচ্ছেন।চুপ করে আছি তার মানে এই না, যা ইচ্ছা বলবেন। আর আমি হলাম প্রিন্স আমাকে বকা দেয়ার অধিকার আপনাদের নেই।আপনারা ভুলে যাচ্ছেন আমি জীন রাজ্যের প্রিন্স। আর এই বৃত্ত টি না থাকলে বুঝতে পারতেন সবাই কত ধানের, কত চাল।আমার বাবা, বোনের সামনে আমার অপমান করা।তখন হারে হারে টের পেতেন এই অপমানির ফল।

রাজা ( রশিদ) বলেঃ বড্ড বেয়াদব হয়ে গেছস!আমার মানসম্মান মাটির সাথে মিশিয়ে দিলি।আর এই ভাবে কেন কথা বলতেচস?।সত্যি করে বল, রিনির সাথে এমন করলি কেন?

তোর তো কোন ক্ষতি করে নি ও।

প্রিন্স ( ইনতিয়াজ) বলেঃ বলবো না আমি। কাউকে জবাব দিতে বাধ্য নই আমি।

তখনই শাম্মি বলেঃ আজ যদি তুই সব খুলে না বলিস।কসম।আমি এমন জায়গাতে যাবো খুঁজে ও পাবি না।আর মনে রাখবি তুর কোন বোন নেই!!!আজ যদি সব স্বীকার না করিস তাহলে মনে করবি তোর শাম্মি নামে কোন বোন ই আর কখনো ছিলোই না!!!

প্রিন্স বলেঃ আমি কার জন্য আসছি এখানে ? তুই না ডাকলে আমি জীবনে ও আসতাম না এখানে। বাবার ডাকে ও সাড়া দেয়নি।দেখিস নি। জানিস তো।।প্লিজ বোন এমন করিস না।আমি বাঁচতে পারবোনা তুই বিনা।

শাম্মি বলেঃ তাহলে সব স্বীকার কর???কিন্তু

তবু ও বেশ কিছুক্ষণ প্রিন্স চুপ ছিল।

অর্ক বলেঃ কি হলো বল?প্রিন্স!

কামাল বলেঃ প্রিন্স ধৈর্যের পরীক্ষা নিচ্ছো মনে হয় আমাদের। সব বল না হয় তোমার অবস্থা খুব খারাপ হবে।

রাবেয়া বলেঃ এখন চুপ কেন? রাতের পর রাত আমার মেয়ে কে নিয়ে নষ্ট খেলাই মেতে উঠচস।ফস্টিনস্টি করচস।আমার নির্দোষ মেয়ে টা কিছুই জানতো না । আর এখন স্বীকার করতে বলছি,মুখে তালা দি রাকছস কেন?

লাবু বলেঃ শান্ত হন ভাবি। আপনি এমন করলে নিজেভ অসুস্থ হয়ে যাবেন।

হাবিব বলেঃ আর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করবো।না বললে তোমার উপর আমরা যে কোন সময় যে কোন action নিতে বাধ্য হব।

রাহাত হুজুর বলেঃ আমার রাগ উঠলে তোমাকে শেষ করে ফেলবো কিন্তু প্রিন্স ?তুমি জানো এটা করা আমার জন্য বড় ব্যাপার নই। যা বলার তাড়াতাড়ি বলো!!!

প্রিন্স তখন ও চুপ ছিল। তখনই হঠাৎ

জান্নাত বলেঃ শাম্মি তুমি বরং যেখানে যাবে বলছিলে চলেই যাও।তোমার ভাইয়ের মুখে তালা দিয়ে আছে। আর তোমার ভাই তোমাকে ভালোবাসে না। তাই এখন ও চুপ।চলে যাও।যত তাড়াতাড়ি পারো!!!!

শাম্মি বলেঃ এখনই চলে যাচ্ছি।ভাই তুই আমাকে জীবনে ও আর খুঁজে পাবি না

প্রিন্সের চোখ জোড়া অশ্রুতে টলমল করছে। আর চোখ জোড়া আগুনের গুলাগ এর মতো লাল হয়ে আছে ।ওদের প্রতি তিব্র রাগের বহিঃপ্রকাশ তার চোখ জোড়া দেখলেই বুঝা যাচ্ছে।

কথায় আছে, ভাইয়েরা হচ্ছে আল্লাহ পাক এর এক বড় নিয়ামত। বোনের সুখের জন্য, বোনের মুখে হাসি ফুটাতে তারা সব করতে পারে। সে কাজ যত কঠিন হোক না কেন। ভাইয়েরা সে কাজ অনায়াসে বোনের জন্য করে পেলে।

বিনিময়ে তাদের বোনের মুখে এক টুকরো হাসি। ভাইদের সব গ্লানি মোচন করে দেয়।

আসলে প্রিন্স ও বোনকে মারাত্মক ভালবাসে।

আর তাইতো,

শাম্মি যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই প্রিন্স চিৎকার দেয়। আর,

প্রিন্স বলেঃ আমি প্রতিশোধ নিছিলাম!!!!

প্রতিশোধ।।।।।

শাম্মি অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে প্রিন্সের দিকে।

শাম্মি বলেঃ তুই একটা জীন?

আর রিনি একটা মানুষ। আর তুই নরমাল কোন জীন নই।জীন রাজ্যের প্রিন্স। তোর সাথে ওর কিসের শত্রু থামি?

প্রিন্স দির্ঘ নিঃশ্বাস নেই।।

তখন অন্য দিকে রিনি সব শুনছিলো।কে কি বলছে, কি করছে!

তবে সে চুপ ছিল।

কারণ সে ও জানতে চায়। কেন রাতের গভীরে এমন একটা ঘৃণার কাজ প্রিন্স তার সাথে করলো।

আসলে বিয়ে পর স্বামী, স্ত্রির সম্পর্কে ঘনিষ্ঠ হওয়া হালাল।এটা সবার কাছে গ্রহণনীয়।

কিন্তু বিয়ে আগে এরকম ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়িয়ে যাওয়া সম্পূর্ণ হারাম।সকলের নিকট দৃষ্টি কোটো। আর সবাই ঘৃণার চোখে দেখে।

ঠিক তাই রিনির কাছে ও এটা একটা ঘৃণিত কাজ হিসেবে গণ্য হচ্ছে।

তখনই প্রিন্স চোখ জোড়া বন্ধ করে আর বলতে শুরু করে ঃআমি আর আমার বোন খুব ঘুরে বেড়াতাম। ২ জনে ভ্রমণ পিপাসু।আর আমাদের যখন যেখানে ইচ্ছা চোখের পলক ফেলতেই চলে যেতে পারি।সব জায়গায় তো জীন থাকে ।

বাবা খুব ভালো রাজা তাই সবাই বাবা কে অনেক সম্মান করে,ভালোবাসে।

আর যেখানে যেতাম সেখানকার জীনেরা আমাদের খেয়াল রাখতেন। আর যেকোনো সমস্যার মধ্যে পড়লে।যেখানে যেতাম সেখানের জীনেরা সামলে

নিতো।তাই মা বাবা ও নিশ্চিন্তে আমাদের ভাই, বোনকে ঘুরতে দিতো।কোন বাঁধা দিতো না।

কিন্তু একদিন বোন বলে।কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ঘুরবে।

তাই

একদিন আমি, আর বোন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে আসি। ২ জনে নির্ঝন

জায়গায় বসে ছিলাম।

কিন্তু একটু পর শাম্মি আমাদের বাসায় মানে আমাদের রাজ্যে ফিরে যাবে বলে।তার নাকি কি কাজ বাকি আছে।

আমাকে ও চলে যেতে বলে।কিন্তু আমি প্রকৃতির সুন্দর এই রুপকে আরোও উপভোগ করতে চাইছিলাম।

তাই বলি,তুই যা।আমি কিছুক্ষণ থাকি এখানে?

শাম্মি বলেঃ বুঝেছি তুই এই রোমাঞ্চকর সময় টা আরো উপভোগ করতে চাচ্ছিস?

প্রিন্স বলেঃ কেমনে বুঝস মনের কথা?

শাম্মি বলেঃ কিস কা বেহেন দেখনা পাড়ে গা!

এই বলে শাম্মি আমাকে রেখে চলে গেল।অল্প সময়ে নিমিষেই হাওয়ার সাথে মিলিয়ে গেলো।

আমি বসে ছিলাম একা। ঠান্ডা হাওয়া, নির্জন একটা জায়গা। সমুদ্রের ঢেউয়ের গর্জন।

এক কথায় অসাধারণ একটা মূহুর্ত।আর অসাধারণ পরিবেশ।

কিন্তু ঠিক কিছুক্ষণ পরে আমি যেনো একটা কিসের শোরগোল এর শব্দ শুনতে পেলাম।এই শোরগোল কোথায় হচ্ছে তা দেখার জন্য

সমুদ্রের ধারে যে গাছ আছে। সে গাছের সারিতে খুজতে লাগলাম।

আর ঠিক তখনই একটা মিষ্টি গানের গলা শুনতে পেলাম।আমার মন সেই সুরে মাতাল হয়ে যাই ।

আরও দ্রুত খুঁজতে থাকি।

সেই কন্ঠ কে সে কন্ঠ রিতিমতো আমার হৃদয় কে ঘায়েল করে দিলো!

খুঁজতে খুঁজতে সমুদ্রের গাছের সারির একটু গভীরে গেলাম। তখন একটা গান গাইছিল সে ঘায়েল করা কন্ঠ সেটা ছিলোঃ

অনেক সাধনার পরে,

আমি পেলাম তোমার মন।

তুমি বুকে টেনে নাও না প্রিয় আমাকে,

আমি ভালোবাসি ভালোবাসি, ভালোবাসি তোমাকে।।।।

গানটা শুনছিলাম আর অবিরত খুঁজেতে থাকি।

ঠিক সেই মূহুর্তে দেখলাম,একটা মেয়ে কে বেশ কয়েক জন ছেলে মেয়ে চারপাশে ঘিরে বসে আছে। আর তাদের মধ্যে বসা।সে-ই মেয়ে টি গান গাইছে।

আমি মেয়ে টাকে ভালোভাবে দেখতে পারছিলাম না।

আমি তো অদৃশ্য আমি ওদের দেখতে পেলে ও ওরা কেউ আমার ইচ্ছে ছাড়া আমাকে দেখতে পাবে না।

তাই আমি আরেক টু কাছে গেলাম। যাতে আমার হৃদয় ঘায়েল করা কন্ঠের অধিকারিনীকে এক ঝলক দেখতে পারি।

ঠিক তখনই আমি দেখলাম,,,,,,,,,,

চলবে...

0 Post a Comment:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন