নরপশু সত্য ঘটনা অবলম্বনে

নরপশু

৩য় খন্ড

সত্য ঘটনা অবলম্বনে

Nusrat Haq..



আমার মনে হলো আমি দোযখ খানায় এসে পড়েছি।

সে দিনের ২ টা বাজে ঘুম থেকে উঠলো। উঠে বললও ভাত দাও।

আমি দিলাম। তারপর তাকে বললাম আচ্ছা বাথরুম কোথায় তারপর পানি কোথা থেকে আনবো।

সে ভাত খেয়ে উঠে আমাকে বাথরুমে নিয়ে গেলো৷ কি বলব বাড়ি থেকে অনেক দুরে একটা জঙ্গলের মত জায়গায়।

রাত বিরাতে তো আসায় যাবে না। আর বষার সময় ভুলেও না।

তারপর সে একটা বাড়ি দেখালো ওখান থেকে পানি আনতে বললও।

আর রাস্তার পাশে মসজিদের পুকুর থেকে গোসল করতে বললও।

আমি তো কান্নায় শেষ এটা কি হলো।

নসিবে এটা কি হলো৷

যায় হোক আমাকে আমার বাপের বাড়ি থেকে কেউ দেখতে ও আসলো না।

দিন যেতে লাগলো আর তার অত্যাচার বাড়তে লাগলো।

অহেতুক গালাগালি করা।আমাকে বিয়ের ৭ দিনের দিন রাতে মারতে শুরু করলো।

সে মদ খেয়ে মাতাল হয়ে আসলো আর আমার জামা খুলতে একটু দেরি হয়েছিলো চাহিদা মিটানোর জন্য।

কি জঘন্য সময় ছিলো বলে বুজাতে পারবো না।

খুব লজ্জা লাগতো অন্যের বাড়িতে পানি আনতে যেতে৷

তারপর মসজিদের পুকুরে গোসল করতে।

আমি ২ দিনেও গোসল করতাম না লজ্জায়। আর রাতের বেলা প্রসাব ধরলে ও বালতি ভরে করতাম তাও বাথরুমে যেতাম না।

বাথরুমে না যাওয়ার জন্য একদম কম খেতাম।

আর তার তো কোনো খবরই থাকতো না। সে ঠিক মত কাজ ও করতো না।

একদিন বাজার আনলে ১০ দিন আনতো না।

বলে বুজাতে পারবো না আমার কস্টের কথা গুলো।

শুধু আল্লাহকে বলতাম আল্লাহ তুমি একি রাখছো নসিবে জীবনে কি সুখ দিবা না।

তো বিয়ের ১ মাস পর আমাদের বাড়িতে যায়। গিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করি।

আর মা আমাকে বললও এত ডং করতে হবে না অনেক ডং করছস।

বাড়িতে ১ দিন থাকার পর বাবা বললও কিরে যাবি না বিয়ে দিয়ে দিছি এখানে কি।

শশুর বাড়িতে যা।

তাদের আমি খুলে বললাম এই এই অবস্থা। কিন্তুু তারা বললও বিয়ে দিছি এটাই বেশি৷

তারপর মাকে বললাম।

মা ও মা আমি তো তোমার মেয়ে কেন আমার সাথে এমন করলে।

মা বললও পেট বাঁধানোর সময় মনে ছিলো না।

আমি এটা বলতে পারলাম না বাহিরের মানুষ না ঘরের মানুষই করেছে।

নসিব খারাপ হলে যা হয় আরকি।

এরপর সব মেনে নিলাম আর নিজে নিজে যুদ্ধ শুরু করলাম৷

শশুর বাড়িতে এলাম।

মনোবল আরো শক্ত করলাম। এখানেই আমার থাকতে হবে।

কিন্তুু বর প্রতিরাতে মদ খেয়ে মাতাল হয়ে আসতো।

বিয়ের ১ মাস পর চালের কথা বললাম। ঘরে চাল ডাল কিছু ছিলো না।

চালের কথা বলার সাথে সাথে মাইর।

বলত কাজ করে খা।

আমি বিয়ের ১ মাস পর থেকে মানুষের বাড়ি কাজ করতাম৷ তারা যা দিতো চাল ডাল তাই খেতাম।

আমার মা আমার একটা বার খোঁজ ও নেয়নি

মানুষের ধান ঝাড়তাম উঠান লিপতাম।

তারা যা দিতো তাই খেতাম কারন বর বাজার করতো না। আর সে কাজ ও করতো না।

বিয়ের সময় আমাকে আমার বাপের বাড়ি থেকে ১ জোড়া কানের দুল আর চেইন দেয়।

একদিন সনধ্যা বেলা এসে বলে তোমার চেইন টা দাও তো।

সাধারণত সে সনধ্যার দিকে বাড়ি আসে না।

আমি সরল বিশাসসে তাকে চেইন টা দিলাম।

তো সে যখন মাতাল হয়ে বাড়ি ফিরলো আমি কিছু বললাম না তাকে।

সকালে চেইনের কথা জিজ্ঞাস করে আমাকে মাইর বলে তোর বাড়ি থেকে আমাকে ১০ হাজার টাকা ছাড়া আর কি দিছে।

আমি ও মাইর খেয়ে পড়ে রইলাম কি বলব আর।

প্রায় সে আমাকে যৌতুকের জন্য নিযাতন করতো।

না পারতাম বাচতে না পারতাম মরতে।

মানুষের বাড়িতে সারাদিন কাজ করার পরে ও ঘরে এসে কাজ করতে হতো। রান্নার জন্য লাড়কি আর পাতাটা ও আমাকে খুজে আনতে হতো।

সে একদিন কাজে গেলে ১০ দিন যেতো না।

আর মদ খেয়ে টাকা সব শেষ করে ফেলতো।

আমি আমার কানের দুল জোড়া লুকিয়ে রাখলাম।


এর পর একদিন রাতে সে তার একটা বন্ধু নিয়ে আসে।

সাথে তারা খাওয়ার জন্য কি কতগুলো আনে।

আমি খেলাম।

আমার খুব মজা লাগলো।

কিন্তুু এর কিছুখন পরেই আমার খুব ঘুম আসলো৷

ঘুম থেকে উঠে অনুভব করলাম আমার শরীর খুব ব্যাথা।

ব্যাথার জন্য উঠতে ও পারছিলাম না।

নাপা খেলাম৷

আর সেদিন কাজে গেলাম না।

মানুষের বাড়ি থেকে খাওয়ার পানি আনতে গেলে তারা নানা রকম করতো।

অনেক সময় কলে তালা মেরে দিতো৷

তারপর নানা রকম কটু কথা বলতো।

আর সবাই আমাকে নিয়ে অনেক আফসোস করতে।

আমার বরকে এলাকায় মদতি রফিক বললে সবাই চিনে শুধু রফিক বললে কেউ চিনে না।

আমি শুধু আল্লাহকে ডাকতাম। আমার বর বছরের ঈদের দিনে ও নামাজ পড়তো না কতবড় কাফের ছিলো।

তারপর থেকে প্রায় সময় বন্ধুটা আসতো।

আর সে যেদিন আসতো সে দিন আমার খুব ঘুম আসতো।

তো একদিন সনধ্যা বেলায় বন্ধুটা ঘরে আসে। আমার গায়ে হাত দেয় আর আমি বলি কি সমস্যা। সেটা আমি আবার আমার বরকে বলি। তখন বরের বন্ধু আমায় উওর দেয় প্রতিদিনই তো তোমার গায়ে হাত দেয় তখন সমস্যা হয় না।

আমি কথা শুনে থ হয়ে গেলাম মানি কি।

তারপর বরের বন্ধু আমার বরের সামনে আমার রেপ করে।

আমি কাঁদলে আমাকে অনেক মারে আর বলে এমনি এমনি করে না আমাকে টাকা দেয়।

আমি আর এই অত্যাচার নিতে পারতেছিলাম না৷

সবসময় আল্লাহ ডাকতাম আর বলতাম আমার বরের মৃত্যু হয়না কেন।

এরপর থেকে বন্ধুটা প্রায় আসতো আর আমার বাজারের কস্ট হতো না।

আমি কোনো প্রতিবাদ করলে আমাকে অমানুষের মতল মারতো।

আর সবসময় বলত বাপের বাড়ি থেকে টাকা আন।

টাকা না আনলে এভাবে টাকা ইনকাম করে দিবি।

তারপর কিছু দিন পর বাবার বাড়ি যায়। মাকে টাকার কথা বলতে এক প্রকার আমাকে ঝেটিয়ে বিদায়,করলো।

আমিও নিরুপায় কি করবো। শশুর বাড়িতে চলে আসলাম৷

বর এর পর অনেক রকম লোক আনতো ঘরে৷ আর আমি তাদের চাহিদা মিটাতে হতো। আর না মিটালে আমাকে খুব মারতো৷ ছেলে মানুষের মাইর সেটা তো বুজেনি৷

এর ২ মাস পর ঘরের ভিতর বাথরুম আর কল দিলো।

কারন লোকগুলো আসে৷

এক প্রকার আমাকে আমার বর দেহব্যবসায়ী বানাই দিছে।

শুধু আল্লাহ কে ডাকতাম আল্লাহ হেদায়েত করো।

তারপর গ্রামের অনেকেই বলতো মদতিদের ঘরে এত মানুষ কেন যায় ছেলে মানুষ দের আড্ডা।

আরো অনেক কথা।

তারপর একদিন শুনলাম আমার বর বাড়ি বন্ধক দিছে জুয়াই হারি যাওয়াই।

আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। এটা কি হলো।

তারপর আমায় আমার বর বললও এভাবে টাকা জমালে আর ১ বছর দেহ ব্যবসা করলে টাকা জোগায় হয়ে যাবে।

সেদিন নিজের উপর অনেক ঘৃনা চলে আসলো। বলার মতো না।

আমি একরাতে বাড়ির পাশে এক চাচির অনেক অসুখ থাকায় তাদের বাড়িতে রাতটা থাকি।

রাতে আমার ঘরে গ্রামের চেয়ারম্যান এর লোক এসে আমার বর সহ সবাইকে ধরে নিয়ে যায়।

আর জুয়া খেলার জন্য,সবাইকে অনেক মারে।

সেটা আবার আমি শুনি।

চলবে...

0 Post a Comment:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন